নিজস্ব প্রতিনিধি: পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার রামনগর-২ ব্লকের পশ্চিম পুরুষোত্তমপুর এলাকায় ৪টি অবৈধ হোটেল(Illegal Hotel) ভাঙাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ চলল। অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে কিছু দিন আগে ওই চারটি হোটেল ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। কাঁথি থেকে থেকে মন্দারমণি(Mandarmani) যাওয়ার রাস্তায় শৌলার কাছে মুকুন্দপুর গ্রামে মেরিন ড্রাইভের ধারে ওই ৪টি হোটেল গড়ে উঠেছিল। জায়গাটি দিঘা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে, সমুদ্রসৈকত থেকে বেশ খানিকটা দূরে অবস্থিত। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ৪টি অবৈধ হোটেল ভাঙার কাজ শুরু করতে যায় পুলিশের বিশাল একটি দল। সঙ্গে ছিল বুলডোজার ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকেরাও। কিন্তু পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে গেলে রাস্তায় গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, ওই ৪টি হোটেলের মধ্যে একটি হোটেল স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা চালান। বৃহস্পতিবার ওই গোষ্ঠীর মহিলারাই অবরোধের সম্মুখভাগে ছিলেন। পুলিশ আসার আগেই রাস্তায় শুয়ে পড়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ওই মহিলারা। তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকায় অনেক অবৈধ হোটেল এবং রিসর্ট আছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় সেগুলি রমরম করে চললেও কেন ওই ৪টি হোটেলকে ভাঙা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। যদিও পুলিশ জানায় কোস্টাল আইন লঙ্ঘণ করে ওই ৪টি হোটেল তৈরি করা হয়েছে বলে হাইকোর্ট ওই ৪টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে। তাঁরা আদালতের নির্দেশ মানছেন মাত্র। আইনের কাছে এবং আদালতের নির্দেশের কাছে তাঁরা অপারগ। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাঁদের কথায় কান দেননি। তারপর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত দফায় দফায় চলে দুই তরফের আলোচনা। কিন্তু তাতেও উত্তেজনা থামেনি। এর পর আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ এবং প্রশাসন।
এরপরেই ঘটনাস্থলে আসে উপকূলীয় থানার আধিকারিকরা। তাঁদের নির্দেশেই পুলিশ অবরোধ বিক্ষোভ ওঠাতে তৎপর হতেই পাল্টা আক্রমণ ধেয়ে আসে পুলিশকে লক্ষ্য করে। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় গ্রামবাসীদের। স্থানীয়দের সরাতে লাঠিচার্জও শুরু করে পুলিশ। খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় দুই পক্ষের মধ্যে। পুলিশের লাঠিচার্জের পরেও ঘটনাস্থল ছেড়ে সরেননি গ্রামবাসীদের অনেকেই। শেষে প্রচুর পুলিশ জমায়েতকে এক দিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বুলডোজার দিয়ে হোটেল ভাঙার কাজ শুরু করেন। বিকালের মধ্যেই সেই কাজ শেষও হয়। যদিও সেখানে উত্তেজনায় থেকে যাওয়ায় রাত অবধি পুলিশ বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন।