নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: চুরি করা মোবাইলকে ব্যাবহার করে নাশকতার ছক কষছে মাওবাদীরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে, বিশেষ টিম গঠন করে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। তাতেই আসে সাফল্য।এবছরই চুরি যাওয়া প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকার মোবাইল উদ্ধার করে জনসাধারনের হাতে তুলে দিলো ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। সীমান্ত এলাকা ঝাড়গ্রাম জেলা(Jhargram District) এখনোও একমাত্র মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা। তাই এখানে মোবাইল চুরি হলে তা পুলিশ বিশেষ মামলা হিসেবে গন্য করে।
কারন এই মোবাইল ব্যাবহার করে যে কোনো নাশকতার ঘটনা ঘটাতে পারে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা সশস্ত্র মাওবাদীরা। গোয়েন্দ সূত্রে এই খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। ২০১৯ সালে প্রথম পুলিশের নজরে আসে বিষয়টা। ঝাড়গ্রামের মত এত ছোট জেলাতে এত মোবাইল চুরি কেনো হচ্ছে? তদন্তে বিষয়টা সামনে আসার পরেই ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা এক ডিএসপির (DSP)নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করেন। শুরু হয় অপারেশন “প্রত্যার্পণ”। ২০১৯ থেকে এখনো প্রায় প্রায় ২কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার মোবাইল উদ্ধার করে। যার মধ্যে শুধু ২০২৩ সালেই এখনো পর্যন্ত ৭৬লক্ষ টাকার কাছাকাছি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মোবাইল প্রত্যার্পন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রাপক দের হাতে তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা।
পাশাপাশি ২০০কিমির মধ্যে যদি কোনো রোগীর রক্তের প্রয়জন হয় তাহলে রোগীর কাছে ডোনার পৌছে রক্ত দেওয়ার পরিষেবা “দান” প্রকল্পের ঘোষনা করেন তিনি। এতে একদিকে যেমন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচবে, অপর দিকে মোবাইল উদ্ধার তৎপরতায় মোবাইলকে ঘিরে নাশকতর আশঙ্কাও অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব হবে। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জঙ্গলমহলবাসীকে সতর্ক করে বলা হয়েছে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল তারা যেন সাবধানে রাখে নিজের হেফাজতে। এমনকি কোথাও কোন মোবাইল জঙ্গলের মধ্যে পেলে তৎক্ষণাৎ যেন তা পুলিশের কাছে জমা করে। অপরিচিত কোন ব্যক্তিকে যেন নিজের মোবাইল ব্যবহার করতে না দেয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, মাও নেতা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষানজির(Kisanji) মৃত্যুর পর থেকেই মোবাইল ব্যবহারে সতর্ক হয়েছে সশস্ত্র বিপ্লবে বিশ্বাসী মাওবাদীরা। পুলিশ যাতে মোবাইল নেটওয়ার্ক এ কাজে লাগিয়ে তাদের নাগাল না পায় তার জন্য নিজেদের সঙ্গে মোবাইল রাখা তারা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে জঙ্গলমহলে পুলিশের সূত্র অনুযায়ী, চোরাই মোবাইলকে হাতিয়ার করে তারা নিজেদের নেটওয়ার্ক ও নাশকতার কাজকর্ম চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। তা ভেস্তে দিতেই তৎপর ঝাড়গ্রাম পুলিশ ।