নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা(PAY) প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে যেমন রাজ্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা হয়েছে তেমনি রাজ্য সরকারও এই প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করতে কড়া মনোভাব নিয়ে চলেছে। তার জেরেই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের নাম কাটা পড়েছে এই প্রকল্পের উপভোক্তার তালিকা থেকে। এই নাম বাদ পড়া মানুষদের একটা বড় অংশ জব কার্ড ডুপ্লিকেশনের(Job Card Duplication) কারণে বাদ গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার থেকেও বড় কথা, নবান্ন(Nabanna) সূত্রে জানা গিয়েছে যাদের যাদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে তাঁরা যাতে ভবিষ্যতে কোনও প্রশ্ন তুলতে না পারে তার জন্য প্রতিটি উপভোক্তার ক্ষেত্রে কারণ, ছবি ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। নাম বাদ যাওয়ার নিরিখে প্রথমের দিকেই রয়েছে দুই মেদিনীপুর, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলা। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও এক লক্ষের কাছাকাছি নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন অমিত শাহয়ের সঙ্গে বৈঠকে একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে সওয়াল মমতার
আবাস প্লাস প্রকল্পে উপভোক্তাদের তালিকা তিন দফা পরীক্ষার কাজ এখন বাংলায় কার্যত শেষ পর্যায়ে যলে এসেছে। প্রথম দফায় অঙ্গনওয়াড়ি ও আশাকর্মীদের তালিকা যাচাইয়ের প্রক্রিয়াতেই অনেক অযোগ্য উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। বিডিও, পুলিশ, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের আরেক দফা পরীক্ষার পর বাদ যায় বহু নাম। বর্তমানে সুপার চেকিংয়ের(Super Checking) কাজও অনেক জেলায় শেষ। কোথাও আবার তা শেষ পর্যায়ে। তাতেও বাতিল হয়েছে অনেক নাম। আর সেই সব তথ্য থেকেই জানা গিয়েছে, রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তাদের তালিকা থেকে ১০ লক্ষের বেশি নাম বাদ চলে গিয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীক্ষা চালানোর সময়ে দেখা গিয়েছে একটি বাড়িতে একাধিক জবকার্ড রয়েছে, এমন অনেকের নাম তালিকায় ছিল। এমন অন্তত পাঁচ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। তালিকায় প্রধান, উপপ্রধানদের নাম যেমন মিলেছে, তেমনই বিভিন্ন পদাধিকারির আত্মীয় যাঁদের পাকা বাড়ি রয়েছে, তাঁদের নাম মিলেছে। এদের সকলেরই নাম কাটা গিয়েছে উপভোক্তার তালিকা থেকে। রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ বেশ কিছু জেলায় এমন বহু দৃষ্টান্ত পেয়েছেন আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন শাহী বৈঠকের আগেই বড় ধাক্কা বঙ্গ বিজেপিতে
রাজ্য সরকার চাইছে কেন্দ্রের ঘোষিত তারিখের মধ্যেই অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ শুরু করে দিতে। কারণ তাহলে কেন্দ্রের তরফে অন্তত বরাদ্দ হওয়া টাকা কেটে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। এদিকে, গ্রামে গ্রামে অযোগ্যদের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ দেখা গিয়েছে। তাঁদের একটাই বক্তব্য, যোগ্যরা যেন প্রাপ্য বাড়ি পায়। সরকারও সেই প্রচেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নির্দেশ, তালিকা থেকে যাতে এমন কেউ বাদ না যান, যাঁর মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের দরকার ছিল।