নিজস্ব প্রতিনিধি: রেশন বন্টন দুর্নীতির ঘটনায়(Ration Distribution Corruption Scam) রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের(Jyotipriya Mallik) বাড়িতে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে হানা দেয় ED বা Enforcement Directorate’র আধিকারিকেরা। টানা ২১ ঘন্টার তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এদিন অর্থাৎ শুক্রবার ভোররাতে তাঁকে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। ঘটনাচক্রে রাজ্যের প্রায় ৬০টি পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় এদিনই ED কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয় কামারহাটি পুরসভার(Kamarhati Municipality) চেয়ারম্যান গোপাল সাহাকে(Gopal Saha)। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকে। এরই মধ্যে ED সূত্রে জানা গিয়েছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থুড়ি বালুর ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু কাউন্সিলরের দিকে নজর পড়েছে তদন্তকারীদের। শুধু এরাই নয়, কয়লাপাচার থেকে গরুপাচার, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে রেশন দুর্নীতিতে রাজ্যের শাসক দলের শতাধিক কাউন্সিলরের দিকেও নজর রয়েছে তদন্তকারীরা।
ED সূত্রে জানা গিয়েছে, বালু ঘনিষ্ঠ মনোজ রায়, রিঙ্কু দে দত্ত, নন্দিনী ব্যানার্জী মৌলিক, বুবাই বোসের দিকে নজর পড়েছে তাঁদের। কেননা ED’র আধিকারিকদের দাবি, এদের ব্যাবহার করা হয়েছে নানা দুর্নীতির টাকা পাচারের কাজে। এদের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এরা জানিয়েছেন, ‘বালুদার পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন, দল আছে। বাকিটা লড়ে নেব। বালুদার পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। পুরোটা বিজেপির গেম প্ল্যান। ইডি, সিবিআই নিয়ে আমরা ভিত নই। আমাদের কেন্দ্রীয় এজেন্সি ডাকলে অবশ্যই সহযোগিতা করব। আমরা কি চুরি করেছি নাকি?’ এদিকে গোপাল সাহা এদিন ফের হাজিরা দিয়েছেন ED’র কার্যালয়ে। এর আগে ষষ্ঠীর দিনও তাঁকে ইডি তলব করে। সেদিন তাঁকে ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে উঠে আসে পুরনিয়োগে গরমিলের অভিযোগ। তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপরই একের পর এক পুরসভায় শুরু হয় ইডির হানা। পুরসভার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এমনকী প্রাক্তন চেয়ারম্য়ানের বাড়িতেও চলে অভিযান। গত ৫ অক্টোবর দক্ষিণ দমদম, বরাহনগরের পাশাপাশি কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার বাড়িতেও ইডির তল্লাশি অভিযান চলে। তদন্তকারীদের অনুমান, উত্তর ২৪ পরগনারই ১২ থেকে ১৪টি পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। সেদিন গোপাল সাহার বাড়িতেও যায় ED। যায় কামারহাটি পুরসভাতেও। এখন দেখার বিষয় আর কোন কোন কাউন্সিলরকে নিজেদের কার্যালয়ে ডেকে পাঠায় ED।