নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রতিবাদী ছাত্রনেতা আনিস খান খুনের ঘটনায় ক্রমশই প্রতিবাদের সুর চড়ছে কার্যত গোটা বাংলা জুড়েই। দলমত নির্বিশেষে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি সবাই এই ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের খুঁজে বের করার বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবুও আনিস খান খুনের ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনা ও ক্ষোভের পারা চড়েই চলেছে। রবিবার সকালে আনিসের বাড়িতে গিয়ে মারমুখী মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ে আমতা থানার পুলিশ। ঘটনার প্রায় ৩০ ঘন্টা পরে পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করছে তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে তেমনি কেন পুলিশের তরফে বার বার আত্মহত্যার তত্ত্ব তুলে ধরা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আনিস খুনের ঘটনায় শনিবার থেকেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে এসএফআই। রবিবার দিনভর তাঁরা রাজ্যজুড়ে আন্দোলন করবে। এর পাশাপাশি মঙ্গলবার মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছে এসএফআই। কেননা রাজ্যের প্রধান সচিবালয় ও মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্নে সরে গেলেও এখনও মহাকরণেই রয়েছে রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর। এসএফআই-য়ের দাবি, এই ঘটনায় শাসকদলের লোকেরাই জড়িত। যদিও আনিসের খুনের ঘটনায় তাঁর পরিবারের তরফে নির্দিষ্ট করে কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ তোলা হয়নি। এই অবস্থায় এসএফআই কেন এই ঘটনায় শাসকদলের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতিতে যখন বিজেপি ক্রমশ তার পায়ের নীচের মাটি হারিয়ে ফেলছে তখন ইস্যু ভিত্তিক ঘটনা নিয়ে রাস্তায় নেমে দলকে আন্দোলনমুখী করে তুলতে চাইছে বাম নেতৃত্ব। কিন্তু এই ভয়ঙ্কর ঘটনাকে রাজনীতির আঙিনায় টেনে এনে বামেরা কী মূল তদন্তের দিক থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আনিসকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতে কার্যত আন্দোলন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আক্রমণ করা হচ্ছে রাজ্যের শাসক দলকে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে পুলিশ নিজে যেখানে এখনও অন্ধকারে রয়েছে যে কারা এই ঘটনায় যুক্ত তা খুঁজে বার করতে তখন বাম নেতৃত্ব ও বাম মনোভাবাপন্ন মানুষেরা কীভাবে জোর গলায় বলে চলেছেন শাসক দলের নেতারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আনিস কলেজ জীবনে এসএফআই-য়ের সদস্য ছিল। সেই সূত্রে রাজ্যের বেশ কিছু বাম নেতা ও ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বেশ ভালই পরিচিতি ছিল আনিসের। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই অবশ্য আনিস আইএসএফের হয়ে কাজ করা শুরু করেন। যদিও এখন আইএসএফ অপেক্ষা এসএফআই আনিস ইস্যুতে বেশি করে রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে।