নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকল্পের নাম PM-POSHAN Scheme বা Pradhan Mantri Poshan Shakti Nirman। পাতি বাংলায় দেশের স্কুলে স্কুলে দুপুর বেলায় যে মিড ডে মিল(Mid Day Meal) খাওয়ানো হয় তারই নতুন নামকরণ। কিন্তু সেই প্রকল্পের জন্যই পড়ুয়াদের মাথা পিছু বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ দেখে এখন বিশেষজ্ঞরাই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন এই নামমাত্র বরাদ্দে কীভাবে পড়ুয়াদের পুষ্টি(Nutrition) হবে? মিড-ডে মিলে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছে কি না, তার খোঁজ নিতে বাংলায় আসছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের দল। আর তার জেরে শুধু বিশেষজ্ঞরাই নয়, মিড-ডে মিলের বরাদ্দ নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। কেন এই প্রশ্ন?
আরও পড়ুন ৩ পুরসভার জন্য ৩২৮ কোটি টাকার পানীয় জল প্রকল্প
জানা গিয়েছে, স্কুলে স্কুলে যে মিড-ডে মিল দেওয়া হয় তার জন্য একা কেন্দ্র সরকার(Central Government) টাকা দেয় না। টাকা দেয় রাজ্য সরকারও(State Government)। যদিও কৌশলে তা চেপে যায় কেন্দ্র। কিন্তু ভাবটা এমন দেখায় যেন গোটা প্রকল্পের খরচ বহণ করে একা কেন্দ্র সরকার। এখন প্রাথমিক স্তরে পড়ুয়া পিছু মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। এর মধ্যে কেন্দ্র দেয় মাত্র ৩ টাকা ২৭ পয়সা আর রাজ্যে দেয় ২ টাকা ১৮ পয়সা। উচ্চপ্রাথমিকের ক্ষেত্রে পড়ুয়া পিছু মোট বরাদ্দ ৮ টাকা ১৭ পয়সা। তার মধ্যে কেন্দ্র দেয় ৪ টাকা ৯০ পয়সা আর রাজ্য দেয় ৩ টাকা ২৭ পয়সা। আর এখানেই মূল প্রশ্ন। বর্তমান বাজারে এই সামান্য টাকায় কোনও শিশুকে কী আদৌ পুষ্টিকর খাবারের জোগান দেওয়া সম্ভব? আর সেই কারণেই রাজ্যের শিক্ষামহল থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা মায় অভিভাবকেরাও দাবি তুলেছেন এই বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াবার জন্য। কিন্তু সেকথা আর কেন্দ্র সরকারের কানে ঢুকছে কোথায়!
আরও পড়ুন প্রায় ১৭ ঘন্টা দেরিতে পৌঁছল রাজধানী এক্সপ্রেস, খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন
রাজ্যের স্কুলে স্কুলে মিড ডে মিলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, যে ভাবে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, তাতে সামান্য সরকারি বরাদ্দে মিড-ডে মিল খাওয়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে। খাবারের গুণমান ঠিক রাখাও অসম্ভব। মিড-ডে মিলের চাল সরকার দেয় ঠিকই, কিন্তু ৫ টাকা ৪৫ বরাদ্দে সব্জি, তেল-মশলাপাতি এবং জ্বালানি হয় না। মিড-ডে মিল প্রকল্পে কোনও প্রাথমিক স্কুলে ১০০ জন পড়ুয়া থাকলে রোজ মিড-ডে মিল খাওয়াতে কম করে ৮০০ গ্রাম ডাল লাগে। যার দাম ১০৪ টাকা। সব্জি লাগে ৪ কিলো যার জন্য খরচ পড়ে ১২০-১৩০ টাকা। আলু লাগে ৫-৬ কেজি যার দাম ১২০ টাকা। তেল-মশলা, আদা-রসুনে খরচ হয় প্রায় ১০০ টাকা। গ্যাস খরচ হয় ১৫০-১৬০ টাকার। সরকার থেকে রন্ধনকর্মীর খরচ (মাসে মাত্র ১৫০০ টাকা) দেওয়ার পরেও প্রতিদিন খরচ হয় প্রায় ৬০০ টাকা। সেখানে মোট বরাদ্দ মোটে ৫ টাকা ৪৫ পয়সা! এই অর্থে কীভাবে পুষ্টির যোগান দেওয়া যায়, প্রশ্ন এখন সকলের।