নিজস্ব প্রতিনিধি : হাসপাতালেই জন্ম। তারপর হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরাই হয়ে উঠলেন এক রত্তি শিশুর অভিভাবক। শিশুটিকে দুধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে দেখাশোনা সবকিছুরই ভার নিয়ে নিয়েছিলেন চিকিৎসক-নার্সরা। এবার তার ঘটা করে অন্নপ্রাশনের ব্যবস্থাও করা হল। এমনই অভিনব ঘটনার সাক্ষী থাকল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে এক মানসিক ভারসাম্যহীন প্রসূতি জন্ম দেন এক শিশুকে। রিজুয়ান বিবি নামে ওই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পুত্র সন্তানের নাম দেওয়া হয় রায়ান। অস্বাভাবিক আচরণের কারণে রায়নকে তাঁর মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। শিশুটিকে লালন পালন করতে শুরু করেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরাই। ছয় মাস ধরে শিশুটিকে কোলেপিঠে করে মানুষ করে তোলেন মৌমিতা বাগ, জুয়েল সাহা সহ হাসপাতালের কর্মীরা। কৃত্রিম উপায়ে শিশুটিকে দুধ খাওয়ানোরও ব্যবস্থা করা হয়।
শুক্রবার সেই রায়ানেরই ঘটা করে অন্নপ্রাশন করা হল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। রীতি রেওয়াজ মেনে শঙ্খ ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে শিশুপুত্রের মুখে ভাত তুলে দিলেন হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল। অন্নপ্রাশনের এই বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকলেন হাসপাতালের নার্স, চিকিৎসক সহ অন্যান্য কর্মীরা। রায়ানকে টোপর, মালা পরিয়ে আনন্দে মেতে উঠলেন হাসপাতালের সকল কর্মীরা। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে মিষ্টিমুখ করানোরও ব্যবস্থা করা হয়। অন্নপ্রাশনের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, এবার রায়ানকে বর্ধমান শিশু কল্যাণ দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। শিশুটিকে শিশু কল্যাণ দফতরের হাতে তুলে দেওয়ার খবরে মন ভারাক্রান্ত হাসপাতালের কর্মীদের।