নিজস্ব প্রতিনিধি: হুড খোলা জিপে চড়ে জনস্রোতে ভেসে আসানসোল(Asansol) লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য সোমবার সকালে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা শাসকের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়ন দাখিল করলেন তৃণমূল(TMC) প্রার্থী তথা চলচ্চিত্র অভিনেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শত্রুঘ্ন সিনহা(Shatrughna Sinha)। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী পুনম সিনহা, তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়(Kalyan Banerjee)। এদিন আসানসোলের রবীন্দ্রভবনের সামনে থেকে শত্রুঘ্নকে নিয়ে হুড খোলা জিপে তৃণমূলের মিছিল বার হয়। সেই মিছিল যেমন জমজমাট ছিল তেমনি শত্রুঘ্ন ও পুনমকে দেখতে আসানসোলের রাস্তায় রাস্তায় জমাট ভিড় ছিল। মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন কয়েক হাজার তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকেরা। আর সেই জমাট ভিড় দেখেই এদিন বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে শত্রুঘ্নকে। নিজের জয়ের বিষয়ে তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসী। তৃণমূলের তরফেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, ‘দুইবার জিতেছে বিজেপি(BJP)। কিন্তু এবার হারবে। মানুষ আর বিজেপির কথায় কান দেবে না। সরাসরি প্রত্যাখান করবে।’
রবিবার রাত ৮টা নাগাদ মুম্বই থেকে সস্ত্রীক অন্ডাল বিমানবন্দরে এসে নামেন শত্রুঘ্ন। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান রাজ্যের পূর্ত ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, হরেরাম সিং, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সহ তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা। দলীয় প্রার্থীকে অভ্যর্থনা জানাতে অনেক আগে থেকেই বিমানবন্দর চত্বরে ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁরা। তৃণমূলের তারকা প্রার্থী বিমানবন্দরের বাইরে বেরিয়ে আসতেই তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিতে থাকেন সমর্থকেরা। পালটা হাত নেড়ে সমর্থকদের অভিনন্দন গ্রহণ করেন তিনি। দলীয় কর্মী সমর্থকদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় আপ্লুত হন শত্রুঘ্নও। বিমানবন্দরেই দাঁড়িয়ে প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাফ জবাব দেন বিজেপির তাঁর বিরুদ্ধে তোলা ‘বহিরাগত’ বিষয়টি নিয়ে। তিনি বলেন, ‘ওঁদের জিজ্ঞাসা করুন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাশী-বেনারস থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উনি কোথায় থাকেন? উনি যদি বহিরাগত না হন, তাহলে আমি কী ভাবে বহিরাগত হব? গোটা রাজ্য সহ আসানসোলের মানুষ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই আছেন। আসানসোলের মানুষও এবার তৃণমূলের সঙ্গেই থাকবেন।’
গতকাল রাতে শত্রুঘ্ন সস্ত্রীক আসানসোলের এক বেসরকারি তারকা হোটেলে উঠলেও এদিন আসানসোল শহরের পাশে থাকা ঊষা গ্রামে একটি হোটেলে উঠেছেন। দলের তরফেই সেখানে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঠিক ছিল সোমবার সকালে ওই হোটেল থেকেই তিনি প্রথমে যাবেন আসানসোলের জাগ্রত ঘাগরবুড়ি মন্দিরে। সেখানে পুজো দেবেন। তারপর ওই মন্দির থেকে সোজা যাবেন জেলাশাসকের অফিসে। কিন্তু এদিন সকালে সেই পরিকল্পনা কিছুটা পরিবর্তন করা হয়। হোটেল থেকেই শত্রুঘ্নকে আনা হয় আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে। সেখান থেকেই বার হয় মিছিল। তারপর জেলা শাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জমা দেওয়া হয় মনোনয়ন। কার্যত এদিন থেকেই পূর্ণ দমে প্রচারে নেমে পড়েছেন শত্রুঘ্ন।