এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বাংলায় আম্ফানের থেকেও বেশি ক্ষতি হবে সিত্রাংয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে(Bay of Bengal) জন্ম নেওয়া সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আয়লা(Aila) ২০০৯ সালে সুন্দরবনে(Sundarban) ১১০কিমি বেগে ধাক্কা দিয়েছিল। ২০২০ সালে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় আম্ফান(Amphan) দিঘায় আছড়ে পড়েছিল ১৫০কিমি বেগে। ভূমি স্পর্শকালে ১ মিনিটের জন্য তার গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১৭৫কিমি। সেই ঝড় কলকাতার ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল ১১০কিমি ঘন্টা বেগে। ওই দুই ঝড়ের স্মৃতি ও তাণ্ডবলীলা এখনও টাটকা বাংলার জনমানসে। বিশেষ করে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলি জেলার মানুষের মনে সেই স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বল করছে। আবার আরও একটি মহাসামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় জন্ম নিতে চলেছে বঙ্গোপসাগরের বুকে। নাম হবে তার ‘সিত্রাং’(Sitrang)। সেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক অভিমুখ রয়েছে উত্তর অন্ধ্র – দক্ষিণ ওড়িশার দিকে। কিন্তু সে একটি বাঁক নেবে সাগরের বুকেই। সেক্ষেত্রে সম্ভাবনা থাকছে সেই ঝড় হাজির হতে পারে বাংলা – ওড়িশা উপকূলে। যদি সেরকম ঘটে তাহলে কালিপুজোর রাতে বা তার পরের দিন ভোরে ওড়িশার বালেশ্বর থেকে বাংলার দিঘার মধ্যবর্তী কোনও একটি স্থানে তার ল্যান্ডফল হতে পারে ঘন্টায় ২০০ থেকে ২৫০কিমি প্রতি ঘন্টা বেগে। আর সেক্ষেত্রে বাংলা কিন্তু আম্ফানের থেকেও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

বিপদ কোথায়? আয়লা যখন ১১০ কিমি বেগে ধেয়ে এসেছিল সুন্দরবনের দিকে তখন উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোয়ার চলছিল। আর তার জেরে সাগরের জল পাহাড় প্রমাণ উচ্চতা নিয়ে হু হু করে ধেয়ে এসেছিল। যারা সেই পাহাড়প্রমাণ ঢেউ প্রত্যক্ষ করেছিলেন তাঁরা আজও বলেন সেদিন সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার ওপর ১০- থেকে ১২ ফুটের জলস্তম্ভ ধেয়ে এসেছিল। একের পর এক নদীবাঁধ ভেঙে ভেসে চলে গিয়েছিল। এখনও সুন্দরবনের বহু জায়গায় সেই সব ভাঙা বাঁধ স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আম্ফানের সময় উত্তর বঙ্গোপসাগরে ভাটা চলছিল, তাই সাগরের জল ধেয়ে আসেনি। কিন্তু ঝড়ের দাপটে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলি জেলায় লক্ষ লক্ষ গাছ মুখ থুবড়ে শিকড় উপড়ে পড়েছিল। ভেঙেছিল ল্যাম্পপোস্ট ও লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘরবাড়ি। পরের বছর ধেয়ে এসেছিল ‘যশ’। তার জেরে বাংলা ঝড়ের মুখে না পড়লেও পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বড়সড় জলোচ্ছ্বাসের মুখে পড়েছিল। উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে গিয়েছিল সাগরের নোনা জলে। স্রোতে ভেসে কেউ কেউ মারাও গিয়েছিলেন। এবার এসবের থেকেও বড়সড় ছাপ ফেলে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং।

উত্তর আন্দামান সাগরে জন্ম নেওয়া ঘূর্ণাবর্ত গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরের বুকে। আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তা বঙ্গোপসাগরে পা রেখেই নিম্নচাপ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। তারপর থেকেই সে ক্রমশ নিজের শক্তি বাড়িয়ে চলবে। আগামী শনিবার তা ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নেবে। তারপরেই সে দ্রুত এগিয়ে আসবে মূল স্থলভাগের দিকে। আসার পথেই সে একটি বাঁক নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার অভিমুখ বাংলা – ওড়িশার দিকে বদলে যেতে পারে। কালিপুজোর রাতে বা তার পরের দিন ভোরে হতে পারে তার ল্যান্ডফল। এমনিতেই সেদিন অমাবস্যা থাকবে। তার জেরে জোয়ারের সময় সাগরের জল কার্যত ফুলে ফেঁপে থাকবে। ঘূর্ণিঝড় যত স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসবে ততই উত্তাল হয়ে উঠবে সাগর। এর ওপর যদি কানাডার গবেষকের দাবি মতো সেই ঝড় ২০০ থেকে ২৫০কিমি বেগে ল্যান্ডফল করে বালেশ্বর ও দিঘার মধ্যবর্তী স্থানে তাহলে বাংলার উপকূল ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়বে। তীব্র জল্লোচ্ছ্বাসে ভেসে যাবে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ৫০ থেকে ৬০কিমি এলাকা। সেই সঙ্গে ঝড়ের গতি ১৫০ কিমি বেগের আশেপাশে থাকলে দুই জেলাতেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকছে। উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলি জেলায় বড়সড় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা না থাকলেও ঝড়ের বেগে আম্ফানের থেকেও ক্ষয়ক্ষতির তীব্র সম্ভাবনা থাকছে।

আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা সিত্রাং তার পূর্ণ শক্তি নিয়ে বাংলা – ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়লে বাংলার বুকে দক্ষিণ ২৪ পরগ্না জেলার সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, কুলতলি-২, বাসন্তী এই ব্লকগুলি সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে জল্লোচ্ছাস ও ঝড়ের দরুণ। একইরকম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর-১, রামনগর-২, কাঁথি-১, কাঁথি-২, খেজুরি-২ ও নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের। দেখার বিষয় রাজ্য সরকার এই ২টি জেলার ১৩টি ব্লকের মানুষকে সময় থাকতে থাকতে কতটা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকেই সেখানে কন্ট্রোল রুম খোলা হতে পারে। আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় ফিরে আসছেন। বিকালেই তিনি নবান্নে ঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে একটি উচ্চস্তরীয় বৈঠক করতে পারেন। সেই সঙ্গে রাজ্যের একাধিক দফতরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারেন। শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার একটি আপাতকালীন বৈঠকের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। ঝড়ের অভিমুখে বাংলা পড়ে গেলে এবারেও নবান্নের কন্ট্রোল রূমে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি চোখে পড়বে বঙ্গবাসীর।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হলে হাতা- খুন্তির লড়াই, হুঁশিয়ারি মমতার

মালদায় পুলিশি অভিযানে উদ্ধার ২৮ কোটির মাদক, ৩২ লাখ টাকা, গ্রেফতার ১

মহিলাদের অপমান করেছে বিজেপি, সন্দেশখালি নিয়ে সুর চড়ালেন অভিষেক

কনে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে শিলিগুড়িতে গাড়ি উল্টে মৃত্যু দু’জনের,আহত অন্তত ২৮

বহরমপুরের কিছু বুথে পুনরায় ভোটের দাবি কংগ্রেসের

বাইরে থেকে ইন্ডিয়া জোটকে সমর্থন, জানালেন মমতা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর