নিজস্ব প্রতিনিধি: হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায়(Heart Attack Treatment) বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যে ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। গ্রামীণ বা শহরতলির যেসব সরকারি হাসপাতালে হার্টের চিকিৎসার যথেষ্ট পরিকাঠামো নেই, সেখানেও সম্ভব হবে জীবনদায়ী চিকিৎসা। এর জন্য পিজি হাসপাতাল বা SSKM Hospital-এ চালু হচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’ টেলিমেডিসিন(Swasthaingit Telemedicine)। কানপুর সহ একাধিক আইআইটির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পরিষেবা চালু হতে চলেছে শীঘ্রই। ইতিমধ্যে বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ৪০টি বড়, মাঝারি সরকারি হাসপাতালকে টেলিমেডিসিনে যুক্ত করে প্রায় ৭৫০ স্ট্রোক রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছে। এক্ষেত্রেও একই মডেলে কাজ হবে। এই ব্যবস্থায় ‘হাব’ বা পরামর্শদানকারী প্রধান হাসপাতাল হবে SSKM Hospital। পরামর্শ নিয়ে পরিষেবা প্রদান করবে ‘স্পোক’ বা জেলা ও মহকুমা স্তরের হাসপাতাল।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, SSKM Hospital’র কার্ডিওলজি ও মেডিসিন বিভাগ টেলিমেডিসিন চালু করবে। ‘স্পোক’ হাসপাতালে হার্ট অ্যাটাকের রোগী এলে আইআইটি নির্মিত বিশেষ ধরনের একটি চেয়ারে বসানো হবে তাঁকে। সঙ্গে সঙ্গে রেকর্ড হতে শুরু করবে তাঁর প্রেসার, সুগার, নাড়ির গতি, ইসিজি, হার্টের পাম্পিং সহ নানা তথ্য। সেগুলি অনলাইনে চলে যাবে পিজির চিকিৎসকদের কাছে। তাঁরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। চিকিৎসকদের অভিমত, হার্ট অ্যাটাকের ৬ ঘণ্টার মধ্যে থ্রম্বোলাইসিস(Thrombolysis) করা জরুরি। সময় নষ্ট মানে হার্টের মাংসপেশি নষ্ট। অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি বা বাইপাস সার্জারিতে রোগী হয়তো প্রাণে বাঁচবেন। কিন্তু হার্টের মাংসপেশির মারাত্মক ক্ষতি হলে তিনি অল্পেতেই হাঁফিয়ে পড়বেন। পরিশ্রম করতে পারবেন না। সেই জায়গায় যদি সময়ে স্টেপটোকাইনাস, ইউরোকাইনাস, টিপিএএস-এর মতো জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়, বড় হাসপাতালে গিয়ে স্টেন্ট বসানো বা বাইপাসের জন্য কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা সময় পাওয়া যাবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে থ্রম্বোলাইসিস কী? চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তবাহী ধমনী চালু করতে জীবনদায়ী স্টেপটোকাইনাস ইঞ্জেকশনের জুড়ি নেই। হার্ট অ্যাটাক হলে ওই স্টেপটোকাইনাস প্রয়োগে খুলে যায় বন্ধ ধমনী। ফলে স্টেন্ট বসানোর জন্য অনেকটা সময় পাওয়া যায়। হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় এই জীবনদায়ী পন্থাকে বলা হয় থ্রম্বোলাইসিস বা ফিব্রিনোলাইটিক থেরাপি। এর সাহায্যে মোক্ষম মুহূর্তে স্রেফ একটি ইঞ্জেকশন দিয়ে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে ফিরিয়ে আনা যায়। এবার সেই সুযোগই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার করে দিচ্ছে আমজনতার জন্য যা প্রতিটি জেলা ও মহকুমা হাসপাতালে মিলবে। বাঁচবে অনেক জীবন।