নিজস্ব প্রতিনিধি: সিদ্ধান্ত অনেক আগেই দলের তরফে নেওয়া হয়েছিল। দল জিতলে বিরোধী নেতাকেই বসানো হবে পরিষদের সভাধিপতি পদে। কিন্তু দেখা গেল পরিষদের ৯টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনে দলের প্রার্থীরা জিতলেও জিতলেন না শুধু তিনি। মাত্র ২৫০ ভোটে হারলেন তিনি। আর তার জেরেই প্রশ্ন উঠেছে কেন তিনি হারলেন? নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবে দলেরই কেউ তাঁকে হারিয়ে দিলেন? আর এই কারনেই এবার দলের অন্দরেই ঘটনা নিয়ে কাঁটাছেঁড়া শুরু হয়ে গেল। মানে শুরু হতে চলেছে দলীয় তদন্ত। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের(SMP) নির্বাচনে তৃণমূল(TMC) সুনামিতে ভেসে গিয়েছে বাম-বিজেপি-কংগ্রেস। অথচ সেই নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন শাসক দলের হেভিওয়েট নেতা তথা পরিষদের প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা কাজল ঘোষ(Kajal Ghosh)। আর তাও ২৫০ ভোটে। সেই ফল ঘিরেই এখন প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে।
কাজল ঘোষ ফাঁসিদেওয়া(Phnasidewa) ব্লকের তৃণমূল সভাপতি। এর আগের শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে তিনি লড়াই করেছিলেন ফাঁসিদেওয়া ব্লক থেকেই। এবারে তাঁর আসন পরিবর্তন করা হয়। লড়াই করতে হয় খড়িবাড়ি ব্লকের পরিষদের ৫ নম্বর আসন থেকে। কিন্তু পরাজিত হন। পরিষদের ৯টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। খালি কাজলবাবু যে আসনে দাঁড়িয়েছিলেন সেখানে জয়ী হয়েছে বিজেপি। আর এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে কাজলবাবুর হারের এই নেপথ্যের কারন কী? কাজলবাবু এবারে জিতলে কার্যত তিনিই হতেন পরিষদের সভাধিপতি। আর তাই তাঁর হারের ঘটনা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও ভাবাচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে এটা মেনেই নেওয়া হয়েছে, দলের নেতাদের অন্তর্ঘাতেই হেরেছেন কাজলবাবু। আর সেই হারের পিছনে কোন নেতারা রয়েছেন সেটা খুঁজে বের করতেই তৃণমূল কংগ্রেস তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এই বিষয়ে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী(সমতল) পাপিয়া ঘোষ জানিয়েছেন, ‘প্রাক্তন বিরোধী দলনেতার হার মেনে নেওয়া যায় না। তাই সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটের ফল নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর দলের রাজ্য কমিটির নির্দেশ মতো যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ খড়বাড়ি ব্লকের যে আসন থেকে কাজলবাবু পরাজিত হয়েছেন সেই আসন যে যে এলাকা নিয়ে গঠিত সেখানকার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির অধিকাংশ আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতেছেন। হেরেছেন শুধু কাজলবাবু। এখন শোনা যাচ্ছে, পরিষদে বিরোধী দলনেতা থাকাকালীন কাজলবাবু ই-টেন্ডার চালুর পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছিলেন। যার জেরে অনেক ঠিকাদারের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়। ওই ঠিকাদারদের একাংশ গ্রামের কিছু তৃণমূল নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজলবাবুর বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে কাজ করেছেন। এদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে।