নিজস্ব প্রতিনিধি: পুরুলিয়া জেলার ঝালদা(Jhalda) পুরসভার চার বারের কাউন্সিলর তপন কান্দু(Tapan Kandu) খুনের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গেল বেঞ্চ সিবিআই(CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে রাজ্য সরকার। সম্ভাববনা রয়েছে বৃহস্পতিবারই সেই মামলার শুনানির। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছে রাজ্য সরকার। তবে এই ঘটনাকে ভাল চোখে দেখছেন না তপন কান্দুর স্ত্রী তথা ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু(Purnima Kandu)। বৃহস্পতিবার তিনি রীতিমত প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সিবিআই যখন চলে এসেছে তখন রাজ্য সরকার এভাবে বাধা দিচ্ছে কেন? নিশ্চয়ই এমন কেউ যুক্ত আছে, যাকে আড়াল করার চেষ্টা চলছে। রামপুরহাট কাণ্ডে তো রাজ্য বাধা দেয়নি।তালে কী আমার স্বামী কংগ্রেস করত বলেই রাজ্য সরকার চাইছে না যে আমরা সুবিচার পাই।’
তবে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছে সিবিআই। ডিএসপি রঞ্জন কীর্তনীয়ার নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের সিবিআইয়ের দলটি এদিন থেকেই ঘটনার সরজমিনে তদন্তে নেমে পড়তে চলেছে। তার আগেই অবশু বুধবার রাতে ওই দলটি ঝালদা থানাতে যায়। সেখানে তাঁরা তপন কান্দুর মৃত্যু নিয়ে সিটের তদন্তকারী অফিসার ও আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ঝালদা ফরেস্ট গেস্ট হাউসেই অস্থায়ী সিবিআই অফিস গড়ে তোলা হয়েছে। এদিন সেখানে ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষকে তলব করতে পারে সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। তপন কান্দু খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে জেলা পুলিশ কী কী তথ্য প্রমাণ হাতে পেয়েছে সেই সব এদিনই জমা দিতে বলেছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। সেই সঙ্গে জেলা পুলিশের কাছ থেকে কেস ডাইরিও হাতে নিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। এদিন তাঁরা খুনের ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পাশাপাশি তপনবাবুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
গত ১৩ মার্চ ঝালদা বাঘমুন্ডি রাজ্য সড়কের ওপরে গোকুলনগর গ্রামের কাছে খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। পরের দিনই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তথা পুরকর্মী সুভাষ গড়াইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা শুরু হয়। তদন্তে সিট গঠন করা হয়। নিহতের ভাইপো তথা পুরনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়া দীপক কান্দুকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। গত ১৭ মার্চ আততায়ীর স্কেচ প্রকাশ করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। খুনিকে ধরতে পারলে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তপন কান্দুকে খুনের ঘটনায় দীপক কান্দু সহ এখনও পর্যন্ত মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি ধৃতরা হল তপনবাবুর দাদা নরেন কান্দু, কলেবর সিং এবং মহম্মদ আসিফ খান। পুলিশ সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে তপন কান্দু ও তাঁর দাদা নরেন কান্দুর মধ্যে পারিবারিক বিবাদ ছিল। কয়েক বছর আগে থেকেই ভাইকে হত্যার ছক কষছিল নরেন। ভাইকে খুনের জন্য ৭ লক্ষ টাকার সুপারি দেয় নরেন কান্দু, এমনটাই দাবি করেছে পুলিশের। কিন্তু গতকাল খুনের ঘটনার অন্যতম প্রধান প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পূর্ণিমা কান্দু বৃহস্পতিবার এই মৃত্যুর তদন্তেও সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ডিভিশন বেঞ্চে এদিন রাজ্যের আর্জি গৃহীত হয় কিনা, সেটাই দেখার।