নিজস্ব প্রতিনিধি: কিডনির অসুখে ভুগছিলেন স্বামী। জন্মদিনের আগেই তাই স্বামীকে আস্ত কিডনি উপহার দিলেন স্ত্রী। স্ত্রীর কিডনি শরীরে প্রতিস্থাপন করার পর নবজীবন নিয়ে বেঁচে রয়েছেন স্বামী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ঘটকপুকুরের দম্পতি স্বামী চন্দন মুন্সি এবং স্ত্রী জাসমিন মুন্সি। ২০০৩ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তাঁরা। পরিবার সূত্রে খবর, তাঁদের বিবাহের কিছুদিনের মধ্যেই মারা যান চন্দনের মা মানোয়ারা বিবি। তিনিও কিডনির অসুখে ভুগে মারা গিয়েছেন। শাশুড়ির মতো স্বামীকে তিনি কিডনির অসুখে হারাতে চান না। তাই নিজের কিডনি তিনি স্বামীর দেহে প্রতিস্থাপন করিয়েছেন।
জাসমিন জানান, ২০২১ সালে তাঁর স্বামী চন্দনের অসুখ বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছায়। এরপর চিকিৎসকরা ডায়ালিসিস শুরু করেন চন্দনের। ডায়ালিসিস করে সাময়িকভাবে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ ও জমা জল বের করা হচ্ছিল। কিন্তু এভাবে বেশিদিন চিকিৎসা চালানো সম্ভব নয় বলে জানান চিকিৎসকরা। দেহ থেকে বর্জ্য বের করার পাশাপাশি কিডনির আরও গুরুত্বপূর্ন কাজ রয়েছে শরীরে। সেকারণে চন্দনের দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করার কথা বলেন চিকিৎসকরা। কারন সঠিক ম্যাচিং করে কিডনি প্রতিস্থাপন করা গেলে ২৫ বছর পর্যন্ত দিব্যি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন একজন মানুষ। কিডনি দাতার সঙ্গে গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ ম্যাচ করার পাশাপাশি ম্যাচিং করা হয় টিস্যুও। চন্দনের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। এরপর কিডনির সমস্যা নিয়ে বাইপাসের ধারের আর এন টেগোর হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দীপক শংকর রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল। গত ফেব্রুয়ারি মাসে চন্দনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় স্ত্রী জাসমিনের কিডনি। আপাতত সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন তিনি। ৮ এপ্রিল চন্দনের জন্মদিন। তার আগে নবজীবনের উপহার পেয়ে গিয়েছেন। চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী অতিরিক্ত নুন এবং কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পাশাপাশি কিছু নিয়ম মেনে চললে সুস্থ থাকবেন চন্দন।