নিজস্ব প্রতিনিধি: ছিলেন ক্রিকেটার। পরে হন রাজনীতিবিদ। বাবা ছিলেন কংগ্রেসের নেতা। ক্রিকেট ছেড়ে বাবার পথ ধরেই যোগ দিয়েছিলেন রাজনীতিতে। তবে কংগ্রেসে নয়, রাজনীতির যাত্রা তিনি শুরু করেছিলেন বিজেপিতে। হয়েছিলেন দলের দুই দফার সাংসদও। সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়াই করার জন্য গত বছর যোগ দিয়েছিলেন তিনি তৃণমূলে(TMC)। যোগদানকালে বলেছিলেন, ‘বিভাজনের বিরুদ্ধে লড়াই করব। দেশে এখন মমতার মতোই নেত্রী চাই। ওঁর নেতৃত্বে মানুষের জন্য কাজ করব।’ তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ(Kirti Azad)। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন আজাদ। এখন তিনিই রয়েছেন জোড়াফুল টিমে। বুধবার তাঁকে দল থেকেই বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নির্দেশে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) কীর্তি আজাদকে গোয়ায়(Goa) তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব অর্পণ করলেন। আগে এই পদেই ছিলেন বাংলার কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভগবৎ ঝার পুত্র হলেন কীর্তি আজাদ। তাই রাজনীতি তাঁর রক্তেই ছিল। ১৯৮৩ সালের কপিল দেবের নেতৃত্বে যে ভারতীয় ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ জয়ী হয়, তিনি ছিলেন সেই দলের অন্যতম সদস্য। ছ’বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারে ৭টি টেস্ট ম্যাচ এবং ২৫টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন। ১৯৮৬ সালে শেষ আন্তর্জাতিক এক দিনের ক্রিকেট খেলেন কীর্তি। পরে বাবার পথ ধরেই যোগ দেন রাজনীতিতে। তবে কংগ্রেসের হয় নয়, তিনি হাতে ব্যাটন তুলে নিয়েছিলেন বিজেপির হয়ে। ২০০৯ সালে তিনি বিহারের দ্বারভাঙা থেকে বিজেপির সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন। প্রথম দফার সাংসদকাল নির্বিঘ্নে কাটলেও গোল বাঁধে দ্বিতীয় দফার সাংসদকালে। বিজেপি নেতা এবং দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির বিরুদ্ধে দিল্লির ক্রিকেট বোর্ড এবং জেলা ক্রিকেটে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন কীর্তি। যা নিয়ে জল গড়িয়েছিল অনেকটাই। তার জেরেই বিজেপির সঙ্গে মতবিরোধ ও দূরত্ব তৈরি হয় কীর্তির।
২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর কীর্তিকে সাসপেন্ড করে বিজেপি। যদিও তাঁর সাংসদ পদ তখন থেকে গিয়েছিল। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দ্বারভাঙার সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই কীর্তি বিজেপি ছেড়ে যোগ দেন কংগ্রেসে। এমনকি সেই বছরেই তিনি কংগ্রেসের টিকিটে ধানবাদ লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন। যদিও জিততে পারেননি। পরে কংগ্রেসের সঙ্গেও তাঁর দূরত্ব তৈরি হয় ও গত বছর নভেম্বর মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লির সফরকালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন কীর্তি। সেই তৃণমূলের তরফেই এবার তাঁর নয়া ইনিংস শুরু হতে চলেছে গোয়ার মাটিতে। দেখার বিষয় সেখানে তিনি কীরকম রান তোলেন রাজনীতির ক্রিজে।