নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: শ্রীলঙ্কার (Sri lanka) পথেই কী এগোচ্ছে বাংলাদেশ (Bangladesh)? প্রশ্নটা উঠেছে তার কারণ দেশে ক্রমশই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভাণ্ডার (Foreign Currency Reserve) তলানিতে ঠেকছে। দীর্ঘ দুই বছর বাদে মঙ্গলবার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল। আর ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার ক্রমশই কমে যাওয়ায় আমদানিকারকরা ডলারের অভাবে ঋণপত্র (Letter Of Credit) খুলতে গিয়ে বিপদে পড়ছেন। বিএসআরএম (BSRM), পিএইচপি ইন্টেগ্রেটেড স্টিলের (PHP Integrated Steel) মতো অনেক সংস্থা ব্যাঙ্কগুলিতে ধর্না দিয়েও ঋণপত্র খুলতে পারছে না। পরিস্থিতির কবে উন্নতি হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারছেন না বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের শীর্ষ আধিকারিকরা।
গত কয়েক মাস ধরেই দেশে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার টলমল। গত বছরের ডিসেম্বরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। আর তার পর থেকেই হু-হু করে নামতে থাকে ভাণ্ডার। এক সপ্তাহ আগে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সঙ্গে ১৯৬ কোটি ডলার মূল্যের আমদানি দেনা পরিশোধ করেছে। আমদানির অর্থ পরিশোধ করার পর রিজার্ভ কমে গেছে। আকুর সদস্য দেশগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীঙ্কা।
বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার তলানিতে নামার কারণে গত মাস তিনেক ধরেই একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সরকারি কর্মচারী ও আধিকারিক, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধের নির্দেশ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে ৭৫ শতাংশ এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) মার্জিন রাখতে ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক। বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার স্থিতিশীল রাখতে বিদেশ থেকে ডলার আনার প্রক্রিয়া অনেকটাই উদার করেছে। আগে বিদেশ থেকে পাঁচ হাজার ডলার বা পাঁচ লাখ টাকার বেশি আয় পাঠাতে আয়ের নথিপত্র জমা দিতে হতো। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়ে দিয়েছে, যতই বিদেশি মুদ্রা পাঠানো হোক না কেন, আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে না।