নিজস্ব প্রতিনিধি: কালীপুজো মূলত তন্ত্রমতেই হয়। তবে শাস্ত্রমতেও পুজো করেন গৃহীরা। কিন্তু হুগলির আরামবাগের রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা কালীশঙ্কর বাগদী প্রচলিত প্রথার বাইরে গিয়ে পুজো করেন তাঁর আরাধ্য কালীকে। তিনি সরাসরি মা কালীর বুকে পা তুলে দিয়েই পুজো করতে অভ্যস্থ। এমনকি ভাঙা কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে নেচে নেচে পুজো করেন অব্রাহ্মণ কালীসাধক কালীশঙ্কর বাগদী। তবে পুজোর সময় কোনও শাস্ত্রীয় মন্ত্র পাঠ করেন না তিনি। নিজের বাঁধা গান নিজের সুরে গেয়েই মা কালীর পুজো করেন কালীশঙ্কর। আর তাঁর পুজো দেখতে ভিড় করেন অসংখ্য মানুষ।
কেন এই অদ্ভুত রীতিতে পুজো করেন কালীশঙ্কর? নিজেই জানিয়েছেন সে কথা। তিনি বলেন, ছোটবেলায় কালী প্রতিমা গড়তেন তিনি। আর সেই প্রতিমা আকারে অনেক বড়। ফলে রীতিমতো প্রতিমার বুকের উপর উঠেই কাজ করতে হতো। তবে এখন পুজো করার সময় একটা ভাবের মধ্যে থাকেন তিনি। হুগলির আরামবাগের রতনপুর গ্রামের মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে বড় মা’র পুজো। ওই মন্দিরেই থাকেন কালীশঙ্কর। পুজোর দিন মা কালীর সামনে ভাঙা কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে দেন তিনি। আর সেই কাঁচের টুকরোর উপর নেচে নেচে মায়ের আরাধনা করেন তিনি। কাঁসর, ঘণ্টা, শাখের আওয়াজে মন্দির চত্বর পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। একসময় রক্তাক্ত পা সরাসরি কালীর বুকে তুলে দেন কালীশঙ্কর। মায়ের ভক্তিতে পুজারী কালীশঙ্কর ভাঙা কাচের ওপর গড়াগড়িও দেন।
স্থানীয় মানুষদের দাবি, বহু পুরোনো এই পুজোর দায়িত্ব কালীশঙ্করের উপর ন্যাস্ত। তিনিই রতনপুরের বড় মায়ের পুজো করেন। বহু বছর ধরে এভাবেই পুজো করছেন তিনি। একসময় এই কালীপুজো ঘিরে মেলা বসত রতনপুরে। প্রায় ১০ হাজার মানুষ ভোগ খেতেন এই মন্দিরে। কিন্তু গত ২ বছর ধরে করোনা সংক্রমণের জেরে বন্ধ মেলা ও ভোগ বিতরণ। কিন্তু কালীশঙ্করের পুজো দেখতে বহু মানুষ আসেন মন্দিরে। এবারও এসেছিলেন এই অভিনব পুজো দেখতে।