নিজস্ব প্রতিনিধি, মুম্বই: ‘বিশ্বাসঘাতক’ উদ্ধব ঠাকরেকে (Uddhav Thackeray) শিক্ষা দিতে গিয়ে আর এক ‘গদ্দার’ একনাথ শিন্ডেকে (Eknath Shinde) বিশ্বাস করা কতটা ঠিক হল, তা নিয়ে আড়াআড়ি বিভাজন বিজেপি (Bjp) শিবিরে। সূত্রের খবর, একনাথ শিন্ডেকে (Eknath Shinde) পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছেন না বলেই মিলিজুলি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হতে চাননি দেবেন্দ্র ফড়নবিস (Devendra Fadnavis)। নতুন সরকারের অংশীদার হতেও চাননি। যদিও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের রণকৌশল হল, মন্ত্রিসভায় থেকে ক্রমাগত চাপে রাখতে হবে ‘গদ্দার’ শিবসেনা নেতাকে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপরে ছড়ি ঘুরিয়ে নিজেদের কাজ হাসিল করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো দেবেন্দ্র ফড়নবিসের বিকল্প কেউ নেই। তবে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মতে, মিলিজুলি সরকার গড়ার চেয়ে বিধানসভা (Assembly Dissolved) ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনে যাওয়াই যুক্তিযুক্ত ছিল।
যে দল তাঁকে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা দিয়েছে সেই দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার পরে তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা যে তলানিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা বেমালুম বুঝতে পেরেছেন একনাথ শিন্ডে (Eknath Shinde)। তাই অনেকটা ‘ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি’ গোছের মতোই বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেই ফেললেন, ‘আমি কখনই দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করব না।’ কিন্তু সেই কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ বিজেপি নেতা। তাঁদের মতে, একবার বিশ্বাসঘাতকতা যখন রক্তে ঢুকে গিয়েছে, তখন সেই দূষিত রক্ত শরীর থেকে বের করা বড্ড মুশকিল।
সূত্রের খবর, শিন্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠনের বিষয়ে তীব্র আপত্তি ছিল মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ বিজেপি নেতার। এমনকী দলের বর্ষীয়ান নেতা নীতিন গড়করিও (Nitin Gadkadi) শিন্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দল সরকার গড়ুক, তা চাননি। তার কারণ, শিন্ডেকে নিয়ে সরকার গড়লে মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বিজেপি ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছিল, সাধারণ মানুষের কাছে এমন তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। অধিকাংশ নেতাই চেয়েছিলেন বিধানসভা ভেঙে অন্তত তিন-চার মাস রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে নতুন করে নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচন হলে রাজনৈতিক ফায়দা হত বিজেপির। কেননা, শিবসেনার শক্তি দুর্বল হওয়ার ফলে বিজেপি হিন্দুত্ববাদী ভোটারদের একচেটিয়া ভোট পেত।