নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মহাকাশ গবেষণায় ইতিহাস লিখল ভারত। বুধবার সন্ধেয় নির্ধারিত সময় ৬টা বেজে চার মিনিটেই চাঁদের দক্ষিণে নিরাপদে অবতরণ করল চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের ‘ল্যান্ডার বিক্রম’। আর চাঁদের বুকে পালকের মতো ‘ল্যান্ডার বিক্রম’ পা রাখতেই বেঙ্গালুরুতে ইসরোর মিশন কন্ট্রোল রুমে থাকা বিজ্ঞানীরা দু’হাত তুলে ছোট শিশুদের মতো লাফিয়ে উঠলেন। চন্দ্রযান-২ অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পরে খানিকটা মরমে ছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। এদিন তাঁদের বুকের উপর থেকে ব্যর্থতার পাথর নেমে গেল। ভারতই হল বিশ্বের একমাত্র দেশ যাদের মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ প্রান্তের মাটিতে পা রাখল।
গত ১৪ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল চন্দ্রযান-৩। চার বছর আগে ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ মহাকাশযান শেষ পর্যন্ত পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁতে পারেনি। বরং সজোরে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ল্যানডার বিক্রম। ফলে এবার প্রথম থেকেই যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। শেষের ২০ মিনিটে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে সে দিকে সতর্ক নজরদারি রেখেছিলেন তাঁরা।
বিকেল ৫ টা বেজে ৪৪ মিনিটে চাঁদের বুকে পালকের মতো চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে অবতরণ করানোর প্রক্তরিয়া শুরু হয়। বেঙ্গালুরুর ইসরোর এমওএক্সে উপস্থিত ছিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ ও চন্দ্রযান-৩ অভিযানের পিছনে থাকা বিজ্ঞানীরা। সবাই দুরু দুরু বক্ষে সামনের বড় পর্দার দিকে চোখ রেখে চলেছিলেন। ঘরির কাঁটা যত এগিয়েছে ততই রক্তচাপ বেড়েছে। ৬ টা চার মিনিটে ল্যান্ডার বিক্রম পালকের মতো চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গেই লাফিয়ে ওঠেন তাঁরা।
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকেই ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদের বুকে পা রাখার ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী থাকেন তিনি। সফল অবতরণের পরেই সেখান থেকে ভার্চুয়ালি ইসরোর বিজ্ঞানীদের অসাধ্যসাধনের জন্য অভিনন্দন জানান তিনি। ঘোষণা করেন, চন্দ্রাভিযানের পরে এবার শুক্রাভিযান শুরু করবে ইসরো।