নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দেশের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে লজ্জার হার, সেই সঙ্গে জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী হিসাবে ক্রমে গ্রহণযোগ্যতা কমা, সব মিলে এই মুহূর্তে বেশ চাপে রয়েছে জাতীয় কংগ্রেস দল। উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রিয়াঙ্কার মাস্টার প্ল্যানের ভরাডুবি, অন্যদিকে পঞ্জাবে নির্বাচনের ঠিক আগে আগেই মুখ্যমন্ত্রী চান্নির সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সিধুর প্রকাশ্য কোন্দল এই সব কিছুর মাশুল হিসাবেই আজ জাতীয় রাজনীতি বিলুপ্তির পথে হাত শিবির। তাই ভোটপর্ব মিটতেই দলকে বাঁচাতে রবিবার বিকেল চারটেয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছেন সোনিয়া গান্ধি। সূত্রের খবর এই বৈঠকে নেওয়া হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তবে এর মধ্যেই কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে দলকে বাঁচাতে দলের সমস্ত দায় দায়িত্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে চলেছেন গান্ধি পরিবারের সদস্যরা। রাহুল, প্রিয়াঙ্কা এবং খোদ সোনিয়া গান্ধিও নাকি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদের ক্ষমতা তুলে দিতে চলেছেন অন্যদের হাতে।
বৃহস্পতিবার ১০ মার্চ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসার পরে যখন জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের ভরাডুবির চিত্রটি আরও কিছুটা স্পষ্ট হয় ঠিক তারপরেই রবিবার সোনিয়া সিডব্লিউসির বৈঠক ডাকেন। এরপরেই শনিবার একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করে যে, রবিবারের এই বৈঠকেই এক সঙ্গে দল থেকে ইস্তফা দেবেন সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা। এরপরেই জাতীয় রাজনীতিতে শুরু হয় জোর তরজা। জাতীয় রাজনীতির শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে দলের অন্দরের ক্ষোভ বহুদিনের। ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের একগুচ্ছ শীর্ষ নেতাকে সোনিয়া এবং রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা গিয়েছে। এমনকি ২০১৯ সালে যখন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছিল, তখন দলের শীর্ষ নেতৃত্বদের চাপেই দলের সভাপতির পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন রাহুল। তাই এবারও ৫ রাজ্যে লজ্জাজনক হারের পরে দলের সমস্ত পদ থেকে যে সরে যেতে পারেন গান্ধিরা সেই বিষয়ে নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসার পরেই জল্পনা শুরু হয়েছিল।
তবে সংবাদমাধ্যম যাই বলুক না কেন, কংগ্রেস দলের শীর্ষ নেতারা কিন্তু এখনও এই খবর মানতে নারাজ। বরং তাঁরা প্রকাশ্যে খবরটি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সিবার সংবাদমাধ্যমে সোনিয়া, রাহুল, প্রিয়াঙ্কার পদত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই একটি টুইট করেন কংগ্রেসের অন্যতম মুখ্যপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। তিনি এই খবরকে সম্পূর্ণ ভুল, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যে রটনা বলে দাবি করেন। তবে এই খবর ঠিক নাকি পুরোপুরি মিথ্যে সেটা বোঝা যাবে আর কিছুক্ষণ পরে। আর তাই আপাতত রবিবার বিকেলের কংগ্রেসের এই বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ।