এই মুহূর্তে




নীলকন্ঠ পাখি উড়িয়ে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা! কোন রাজবাড়িতে এই অদ্ভূত নিয়ম ?

courtesy google




নিজস্ব প্রতিনিধি : উমার অপেক্ষায় সারাবছর চাতক পাখির মত চেয়ে থাকে বাঙালি। এদিকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মহিষাসুরমর্দিনী। হাতে আর বেশি সময় নেই। এর মধ্যেই মায়ের আগমনীর প্রস্তুতি সেরে ফেলছেন ভক্তরা। তেমনই সেজে উঠেছে শোভাবাজার রাজবাড়ি। তবে এই রাজবাড়িতে দুর্গা পুজোর সময় নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হয়। সেই সূদুর অতীত থেকে চলে আসছে এই নিয়ম।

বনেদি বাড়ির প্রাচীন দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে এটি হল অন্যতম। এই রাজবাড়িতে প্রবেশ করলেই দেখতে পাবেন বড় বড় থাম। এগুলো যেন আজও গল্প বলে। এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই বাড়ির ইতিহাস।

কথিত আছে, নীলকন্ঠ পাখি নাকি কৈলাসে মহাদেবকে মায়ের রওনা বার্তা পৌঁছে দেয়। তাই এই পাখি ওড়ানোর প্রচলন রয়েছে রাজাবড়িতে। অতীতে প্রত্যেক বছর বিসর্জনের দিন আরামবাগ থেকে নিয়ে আসা হত নীলকণ্ঠ পাখি। এরপরই শোভাবাজার রাজবাড়িতে বিসর্জন হত। তবে বর্তমানে এই রীতি আজও রয়েছে। তবে সোলার নীলকণ্ঠ পাখি তৈরি করে তারপর ওড়ানো হয়। এরপরই প্রতিমা বিসর্জন হয়।

ইতিহাস : এই রাজবাড়িতে ঐতিহ্য ও সাবেকিয়ানার ছোঁয়ায় প্রথম দু্র্গা পুজো প্রতিষ্ঠা করেন রাজা নবকৃষ্ণ দেব । ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজদের জয় ঘোষিত হলে লর্ড ক্লাইভকে খুশি করতে রাজা নবকৃষ্ণ দেব এই দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। তবে এই বাড়িটির প্রথম মালিক ছিলেন শোভারাম বসাক। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে রাজা এই বাড়িতে কিনে নিজের মতো করে নাচঘর, দেওয়ানখানা, নৈশভোজখানা সাজিয়ে তোলেন।

এই রাজাবাড়ির ইতিহাস বহু পুরনো। শোনা যায়, লর্ড ক্লাইভ হাতির পিঠে চেপে এই বাড়ির পুজো দেখতে আসতেন। শুধু ইংরেজরাই নন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে শ্রী রামকৃষ্ণ, বিদ্যাসাগর, গান্ধীজীর মত মানুষজনের যাতায়াত ছিল এই বাড়িতে। রাজা নবকৃষ্ণ দেবের ছিলেন সাত রানি। তবে ছয় রানি ছিল নিঃসন্তান। তাই তিনি  তাঁর দাদার ছেলে গোপীমোহনকে দত্তক নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ১৭৮২ সালে রাজার সপ্তম স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয় রাজকৃষ্ণ দেব। যদিও এরপরেই রাজবাড়ি দুটি অংশে ভাগ হয়ে গিয়েচিল।

এই রাজবাড়িতে সাবেকি একচালা মূর্তিতে দেবীর আরাধনা করা হয়। বহু পুরনো প্রথা মেনে আজও পুজো করা হয়।দেবীর বোধন হয় কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে। রথের দিন হয় কাঠামো পুজো। পৌরাণিক ঘোটক আকৃতির সিংহ দেখতে পাওয়া যায়। রাজবাড়ির পুজোয় অন্নভোগ হয় না। শুধু মিষ্টি ভোগ উৎসর্গ করা হয়। নারকেল ও ক্ষীর দিয়ে এক রকমের মিষ্টি এই বাড়িতে তৈরি করা হয়, যার নাম ‘আদা’।

তবে প্রাচীনকাল থেকে ব্রিটিশদের মনোরঞ্জনের জন্য পুজোর ৩ দিন গভীর রাত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা চলত, যা আজও বর্তমানেও রয়েছে। শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল ভোরের মঙ্গল আরতি এবং সন্ধ্যায় মাখন মিষ্টি ভোগ এবং দশমীতে কনকাঞ্জলি। পুজোর এই কটা দিন আনন্দে মেতে ওঠে শোভাবাজার রাজবাড়ি। বহু মানুষ এই উৎসবে অংশ নেয়।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

পুজোর মধ্যেই সরকারি বাসভবন থেকে উচ্ছেদ করা হল খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে

নদিয়া জেলার কোন কোন পুজো পেল বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান?

মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ১৪টি শৃঙ্গ জয় করে রেকর্ড নেপালি কিশোরেরর

দুর্গার এই মন্ত্র জপুন, কেটে যাবে সব বিপদ-বাধা

আগামী বছর এগিয়ে আসছে দুর্গাপুজো, কবে শুরু জেনে নিন…

বেলগাছকে দুর্গা রূপে পুজো, আজও বলির নিয়ম চলে আসছে শীল বাড়িতে

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর