নিজস্ব প্রতিনিধি: শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর রাজ্যে ৩২ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়। যে অর্থ রাজ্যের মোট জিডিপির ২.৫৮ শতাংশ। গতবারও করোনাকালে রাজ্যের অর্থভাণ্ডার ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও কিছুটা সামাল দিয়েছিল দুর্গাপুজো। পরোক্ষভাবে তো বটেই তবে এবার করোনা-কাটায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যক্ষভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিল ইস্ট বেলেঘাটা জনকল্যাণ সঙ্ঘ। এবছর ৭৮ বছরে পা দিল এই পুজো। এবার তাদের পুজোর থিম ‘কাঠ পুতুলে জীবন’।
পূর্ব বর্ধমানের অগ্রদ্বীপ স্টেশনে নেমে কিছুটা গিয়ে পড়ে নতুনগ্রাম। এই নতুনগ্রামে কাঠের তৈরি রঙ-বেরঙের পুতুল জগৎবিখ্যাত। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও এসেছে এই গ্রামে। কাঠের পুতুল বানিয়েই সংসার চলে এই গ্রামের অন্তত ৫০টি পরিবারের। কিন্তু করোনা আর লকডাউনের জোড়া-ফলায় বিধ্বস্ত্ব তাঁদেরও জনজীবন। এই দু’বছরে কোথাও বসেনি কোনও মেলা। ট্রেন বন্ধ, তাই বন্ধ ফেরিও। চরম আর্থিক অনটনে গ্রামের প্রতিটি পরিবার। সেই খোঁজ পাওয়ামাত্র মানবিক উদ্যোগ নিল ইস্ট বেলেঘাটা জবকল্যাণ সঙ্ঘ। এবছর সেই সমস্ত পরিবার থেকে তৈরি সমস্ত কাঠের পুতুল কিনে নিচ্ছে পুজো কমিটি। শুধু তাই নয়, সেখানকার শিল্পীদের নিয়ে এসে চলছে মণ্ডপসজ্জার কাজও। থিমের মধ্যেই নতুনগ্রামের জনজীবনকে ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী সমর সাহা। প্রতিমা তৈরি করছেন সুশান্ত দাস।
শুধু রোজগারের বড় পথ খুলে দেওয়াই নয়, পুজো কমিটির সম্পাদক সুখদেব দাস জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে পাওয়া ৫০ হাজার টাকার অনুদানও নতুনগ্রামের ৫০টি পরিবারের জন্য খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই পুজো কমিটি। তবে শুধু পুজোর সময়েই নয়, সারাবছর ধরেই পুজো কমিটির সদস্যরা মানুষের পাশে থাকে। সারাবছর ধরেই বৃক্ষরোপণ। কোভিড পরিস্থিতিতে দুঃস্থ মানুষের কাছেও খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, রক্তদান শিবির থেকে শুরু করে বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি পরীক্ষাও করা হয়েছে।