নিজস্ব প্রতিনিধি: গতকাল যেখানে বিশ্বকাপের আনন্দে মেতে উঠেছিল গোটা দেশ, সেখানে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে একপ্রকার ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। আর এই কাণ্ডে নাম ওঠে দক্ষিণের দুই সুপারহিট তারকার। অভিনেত্রী তৃষা এবং মনসুর আলি খান। যাঁদের দুজনকেই শেষবার পর্দায় দেখা গিয়েছে ‘লিও’ তে। ছবিটি বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮০০ কোটির মতো আয় করেছিল। ছবিতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন থালাপথি বিজয়, তৃষা এবং খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন মনসুর আলি খান। সম্প্রতি তৃষার সম্পর্কে মনসুরের একটি যৌনতাবাদী মন্তব্য নিয়েই শুরু হয়েছে তোলপাড়। যা নিয়ে ক্ষেপে উঠেছেন নায়িকা নিজেও। এমনকী ছবির পরিচালক লোকেশ কানাগরাজও নিন্দা করেছেন মনসুর আলি খানের। এই নিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনও স্বতঃপ্রণোদিত হয়েছেন এবং মনসুর আলি খানের বিরুদ্ধে প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা করার জন্য ডিজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকী তৃষা, ‘লিও’ পরিচালক লোকেশ কানাগরাজ এবং কার্তিক সুব্বারাজ-সহ একাধিক সেলিব্রিটিদের কাছ থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছেন।
সম্প্রতি এক প্রেস কনফারেন্সে মনসুর আলি খান জানান, তিনি ‘লিও’-তে তৃষার সঙ্গে ‘বেডরুমের দৃশ্য’ শেয়ার করতে না পারায় বিরক্ত। আর মনসুর আলি খানের এই যৌনতাবাদী মন্তব্য অনেকের নজরে বিষাক্ত বলে মনে হয়েছে। ২০ নভেম্বর, ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন X-এ (আগের টুইটার) গিয়ে জানিয়েছেন, মনসুর আলি খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পোস্টে লেখা হয়েছে, “অভিনেত্রী তৃষা কৃষ্ণার প্রতি অভিনেতা মনসুর আলি খানের করা অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য জাতীয় মহিলা কমিশন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ডিজিপিকে আইপিসি ধারা ৫০৯ বি এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আইন চালু করার নির্দেশ দিচ্ছি। এই ধরনের মন্তব্য নারীর প্রতি সহিংসতাকে স্বাভাবিক করে তোলে।” তৃষাও নিজে তাঁদের এই প্রতিক্রিয়াকে ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে মনসুর ‘লিও’ ছবিতে তৃষার সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ হারানোর জানিয়ে বলেন, তাঁদের একসঙ্গে দৃশ্য নেই এবং অভিনেত্রীর সঙ্গে ছবিতে ‘বেডরুম সিন’ রাখা উচিত ছিল। এরপর তিনি গর্ব করে বলেছেন যে, তিনি চলচ্চিত্রে ‘ধর্ষণ দৃশ্য’ অভিনয়ের জন্যে গর্বিত।
তৃষা নিজেও মনসুরের ভিডিওটি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সাম্প্রতিক একটি ভিডিও আমার নজরে এসেছে যেখানে জনাব মনসুর আলি খান আমার সম্পর্কে একটি জঘন্য এবং ঘৃণ্য কথা বলেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা করি এবং এটি যৌনতাবাদী, অসম্মানজনক, অশ্লীলতাপূর্ণ, ঘৃণ্য এবং খারাপ রুচির পরিচয় দেয়। তিনি ইচ্ছা রাখতে পারেন কিন্তু আমি তার মতো করুণ কারো সঙ্গে স্ক্রিন স্পেস ভাগ করে নেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞ এবং আমি নিশ্চিত করব যে এটি যেন আমার বাকি ফিল্ম ক্যারিয়ার আর কখনও না ঘটে। তার মতো লোকেরা মানবজাতির বদনাম নিয়ে আসে।” এদিকে বিতর্ক উড়িয়ে দিয়ে মনসুর আলি খান বলেছেন যে, তিনি এগুলোকে হালকা নজরেই দেখছেন। অতীতেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক এমন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।