এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

তরুণ মজুমদারের স্মৃতিতে বুঁদ গোটা টলিউড

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলা ছবিকে একপ্রকার অনাথ করে দিয়ে সোমবার সকাল ১১.১৭ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন পরিচালক তরুণ মজুমদার। যা রেখে গেলেন তা হল তাঁর সৃষ্টি। রসায়নের ছাত্র মৌল যৌগের হিসাব ভুলে বুঁদ হয়েছিলেন পর্দায় রসায়ন তৈরিতে। আর সেই নেশাই যেন নতুনভাবে তৈরি করে ফেলল বাংলা সিনেমায় এক নতুন অধ্যায়। ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’, ‘পলাতক’, ‘গণদেবতা’, ‘বালিকা বধূ’ এর মত একাধিক ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন সিনেমাপ্রেমি মানুষকে। আর তাই তা এক মাইলফলক হয়ে থেকে গেল। বহু তারকার অভিনেতা হিসাবে জন্ম তাঁর হাত ধরে। সেই তালিকায় রয়েছেন মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়, মহুয়া রায়চৌধুরী, দেবশ্রী রায়, তাপস পাল প্রমুখ। এদিন তাঁর স্মৃতি তর্পণ করতে গিয়ে গলা বুজে এসেছে তাঁদের। মনে শুধুই স্মৃতির বোঝা।

 এদিন পরিচালকের স্মৃতিতর্পণ করেছেন অভিনেত্রী মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়। ১৯৬৭ সালে তাঁর হাত ধরেই পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটে মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের। ৫৫ বছর আগের সেই স্মৃতিতেই বুঁদ হলেন তিনি। কেমন ছিল ‘বালিকা বধূ’-এর দিনগুলো? বলতে গিয়ে চোখের পাতা ভিজে এসেছে অভিনেত্রীর। বলেছেন, ” ‘বালিকা বধূ’ করার সময় আমি খুব ছোট। সেটে দুষ্টুমি করতাম। বকাও খেতাম।” কান ধরে দাঁড় করিয়েও নাকি রেখেছিলেন তাই তাঁকে পরিচালক। তার জন্য মনে বেজায় কষ্ট পেয়েছিলেন। আজ তা শুধুই স্মৃতি। গত তিন বছর আগে কলকাতায় এলেও তাঁদের আর দেখা হয়নি। তাঁর কাছে তাই স্মৃতিই সম্বল। 

পরিচালক তরুণ মজুমদারের যখন ৭৭ বছর বয়স সেইসময় ‘চাঁদের বাড়ি’ ছবি পরিচালনা করেন। আর সেই ছবিতেই প্রথমবার তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আসে রঞ্জিত মল্লিকের। বহুদিন ধরে মনে পোষণ করে রাখা স্বপ্ন ২০০৭ সালে এসে পূরণ হয়। এদিন পরিচালকের মৃত্যুর পর স্মৃতিরোমন্থন করতে গিয়ে রঞ্জিত মল্লিক বলেছেন, ”আমার সৌভাগ্য যে আমি ওনার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। সময় তো থেমে থাকে না। সবাই একদিন না একদিন চলে যাবে। মানুষ চলে যায় রয়ে যায় তাঁর কাজ। উনিও ঠিক সেভাবেই নিজের কাজের মাধ্যমেই বেঁচে থাকবেন আমাদের সবার মনে।”

 বিদেশে বসেই তরুণ মজুমদারের মৃত্যুসংবাদ পেলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। খবরটা শোনার পর থেকেই তাঁর মনে হচ্ছিল যেন চারপাশটা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাংলা ছবির ভাঁড়ার যেন ফুরিয়ে আসছে। বাংলা ছবির যে পরিচালকদের নিয়ে ছবির দুনিয়া গর্বিত তাঁদের অন্যতম এক তরুণ মজুমদার। ‘ইন্ডাস্ট্রি’ এর তনু জেঠু। তাঁর পরিচালনায় ‘পথভোলা’ ও ‘আপন আমার আপন’ ছবিতে কাজ করেছেন প্রসেনজিৎ একথা সবাই জানেন তবে যেটা জানেন না তা হল ১৯৬৩ সালে তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় ‘রাহগীর’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন । তখন তাঁর বয়স সাত কিংবা আট। তাই তিনিই প্রসেনজিতের অভিনয়ের শিক্ষাগুরু। অন্তত তিনি এমনটাই মনে করেন। কড়া শাসন, কখন আবার অপত্য স্নেহ সব মিলিয়ে শুটিংয়ের স্মৃতিই পাথেয় সুপারস্টারের কাছে।

নবতিপর পরিচালকের মৃত্যুর পর স্মৃতিচারণা করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বলে রাখা ভালো বর্তমানের নায়িকাদের মধ্যে ঋতুপর্ণাই ছিলেন তরুণ মজুমদারের প্রথম পছন্দ। তিনটে ছবিতে তাঁরা কাজও করেছেন। প্রথম কাজ আলো আজও মানুষের মনে দাগ কাটে। এদিন স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে অভিনেত্রী বলেছেন পরিচালককে কাছ থেকে দেখতে পাওয়াই তাঁর কাছে এক বিশাল পাওনা। তাঁর অভিনয় ও তরুণ মজুমদারের পরিচালনা এই দুইয়ের অনবদ্য সৃষ্টি ‘আলো’। যা আজও মানুষের মনে দাগ কাটে। এদিন অভিনেত্রী বলেছেন, ”তিনটে ছবি করেছি আমরা একসঙ্গে। তিনটেই মানুষের মনে ছাপ ফেলে গিয়েছে। সম্পর্ক, পারিবারিক বন্ধনের গল্প, তার বাঁধুনি ওঁর ছবিতে যেভাবে দেখা যেত তা সত্যিই উল্লেখ্য।” এছাড়াও গানের ব্যবহার তাঁর ছবি জুড়ে এক বিশাল জায়গা নিয়ে থাকত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানকে যেভাবে নিজের ছবিতে তিনি তুলে ধরতেন তা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। 

তরুণ মজুমদারের সঙ্গে কাজ করতে পারার আনন্দ যখন ভাগ করে নিচ্ছেন সকলে তখন আক্ষেপের সুরে সোহম চক্রবর্তীর গলায়। ছোট থেকেই অভিনয় জগতে পা রেখেছেন সোহম। কাজ করেছেন বহু বিখ্যাত পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গে। তেমনিই কাজ করার সুযোগ এসেছিল তরুণ মজুদারের সঙ্গেও। একবার নয় চারবার সেই সুযোগ এসে ফিরে গিয়েছে। নানা কারণে সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। কাজ করে ওঠা হয়নি। আর তাই আক্ষেপের সুর সোহমের গলায়। বললেন, ”তনু জেঠু মার্চ মাসে ছবির শুটিং শুরু করতেন আর সেই সময়েই থাকত আমার বার্ষিক পরীক্ষা। কাজেই প্রতিবার ছবি করার সুযোগ মিস করি। শুধু তাই? তাঁর একটা ছবির সঙ্গে ‘শাখা প্রশাখা’-এর ডেট মিলে যাচ্ছিল তখন তনু জেঠু নিজেই বলেন সত্যজিৎ রায়ের ছবিটিই করতে।” পরবর্তীকালে যদিও কাজ করা সম্ভব হয়। ‘চাঁদের বাড়ি’ ছবিতে। বলা ভালো শিশুশিল্পীর খোলস ছেড়ে যখন নিজেকে পুরোদস্তুর অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার লড়াই শুরু করেন তখনও ব্রেক দেন তরুণ মজুমদার। শুটিংয়ের সেই স্মৃতিই এখন সম্বল।  

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ফের ‘ডিপফেক’-এর শিকার, এবার কার হয়ে ভোট প্রচার আমিরের?

দিদা হতে চলেছেন নীনা গুপ্তা, বিয়ের ১ বছরের মধ্যেই সুখবর দিলেন মাসাবা-সত্যদীপ

সাতসকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন রজনীকান্ত, ধনুশ, অজিথ, কমল, বিজয়রা

অসুখী দাম্পত্য জীবন নিয়ে বিস্ফোরক ভাস্বর

বোনকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ‘তারক মেহতা’-খ্যাত জেনিফার মিস্ত্রি 

পিতৃ পরিচয় পেতে মরিয়া, রবি কিষাণের DNA টেস্টের দাবি অপর্ণা কন্যার

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর