নিজস্ব প্রতিনিধি: আরিয়ান মামলায় প্রাক্তন মাদক-বিরোধী অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে আগামী ৮ জুন পর্যন্ত গ্রেপ্তারের হাত থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছে হাইকোর্ট। ২৫ কোটি ঘুষ নেওয়ার অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছেন সিবিআই। তবে সিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সমীর ওয়াংখেড়ে। বরং এখন তিনি নিজের আত্মরক্ষার স্বার্থে হাতিয়ার করেছেন বলিউড মেগাস্টারের সঙ্গে কথিত চ্যাটের স্ক্রিনশট। হ্যাঁ, আরিয়ান জেলে থাকা কালীন শাহরুখ নাকি তাঁকে একাধিকবার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে অনুরোধ করেন। কিন্তু সমীরের দেওয়া এই তথ্য ধোপে টেকে নি। গতকালই শাহরুখের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানিয়েছেন, শাহরুখ কখনই সমীরকে অনুরোধ করেননি, বরং তিনি আইনের উপর বিশ্বাস রেখেছিলেন, তার থেকেও বড় কথা শাহরুখ WhatsApp-কোনদিনই ব্যবহার করেননি।
সোমবার বোম্বে হাইকোর্ট প্রাক্তন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো অফিসারকে একটি ৮ জুন পর্যন্ত তাঁর গ্রেপ্তার স্থগিত করেছেন এবং শাহরুখ খানের সঙ্গে সমীরের কথিত চ্যাট ফাঁসের জন্য অফিসারকে তিরস্কারও করেছে।সিবিআই বলেছে যে, মিঃ ওয়াংখেড়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে শাহরুখ খানের চ্যাট মিডিয়ায় ফাঁস করেছেন। যা এই মামলা কে প্রভাবিত করেছে। এদিকে মিঃ ওয়াংখেড়ের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছেন, তিনি মিডিয়াতে কোনও চ্যাট ফাঁস করেননি, এগুলি তাঁর আবেদনের একটি অংশ। শাহরুখ খান নিজেই সমীরকে একজন ন্যায়পরায়ণ কর্মকর্তা বলে অভিহিত করে ছিলেন। প্রাক্তন অ্যান্টি-ড্রাগ অফিসারের উদ্ধৃত স্ক্রিনশট অনুসারে, এসআরকে তাকে লিখেছিলেন, “ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন। আপনি যখনই বলবেন আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার কাছে আসব। যখনই আপনার সুবিধা হবে আমাকে জানাবেন। সত্যিই আপনার ন্যায়পরায়ণতাকে আমি শ্রদ্ধা করি।” অন্যদিকে সিবিআই বলেছে, এই চ্যাট মিঃ ওয়াংখেড়েকে কিছুতেই নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবে না। হাইকোর্ট বলেছে, মিঃ ওয়াংখেড়েকে অবিলম্বে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে এবং প্রয়োজনে সিবিআই-এর সামনে হাজির হতে হবে। আর মামলা চলাকালীন অফিসার মামলা সংক্রান্ত কোনো তথ্য মিডিয়ার সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন না।
ঘটনার সূত্রপাত, ২০২১ সালে, যখন মুম্বইয়ের ক্রুজে একটি পার্টি চলাকালীন অভিযান চালিয়ে বলিউডের বেতাজ বাদশা শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খানকে গ্রেফতার করেন প্রাক্তন NCB প্রধান সমীর ওয়াংখেড়ে। দাবি, আরিয়ানের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার হয়েছে এবং তিনি নাকি মাদক সেবনও করেছিলেন ওইদিন। এই অভিযোগে টানা ২২ দিন জেলে কাটান আরিয়ান, এরপর পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে ২০২২ সালের মে মাসে আরিয়ানকে বেকসুর খালাস করা হয়। দিন কয়েক আগেই ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট সমীর ওয়াংখেড়ের সম্পত্তির তল্লাশি চালিয়ে অনেক অহিসেবি সম্পত্তির খোঁজ পান। এরপর আরিয়ান মামলার তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, সাবেক মাদক বিরোধী প্রধান সমীর ওয়াংখেড়ে নাকি আরিয়ানকে মিথ্যে ফাঁসিয়ে ছিলেন। এমনকী মাদক দোষে যাতে সাজা না ভুগতে হয় আরিয়ানকে, সেই কারণে শাহরুখের থেকে ২৫ কোটি দাবি করেন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসা মাত্রই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।