আন্তর্জাতিকডেস্ক: হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বামপন্থী নেতা লুলা ডি সিলভা। কঠিন লড়াই করে যেমন ক্ষমতার শীর্ষপদে, ব্যক্তিগত জীবনেও কঠিন লড়াই করতে হয়েছিল। পরিবার একে হতদরিদ্র। তারওপর অক্ষরজ্ঞানহীন। চাষ করে আয় বাবার। তাতে সংসার চলত না। চলবে কী করে? পরিবারে আট সন্তান। নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায়। তাই, সংসারের খরচ বহন করতে শৈশবেই লুলাকে রোজগারের রাস্তায় নামতে হয়।
শুরু জুতো পালিশ করা দিয়ে। সেই আয়ের থেকে বাড়ির জন্য কিছুটা দিয়ে বাকি টাকা জমিয়ে রাখতে শুরু করেন। সেই টাকা দিয়ে কিনলেন ঝুড়ি আর চিনা বাদাম। আগের থেকে আয় কিছুটা হলেও বাড়ল বটে। তবে বাড়ির সার্বিক ছবির তেমন কোনও পরিবর্তন না হওয়ায় শুরু হল মোটা টাকার কাজ খোজার।
কাজ পেলেন কারখানায়। লোহা কাটার কাজ। বয়স তখন মাত্র ১৪। কাজ করতে করতে একদিন আঙুলটাই বাদ চলে গেল লুলার। মানসিকভাবে মারাত্মক ভেঙে পড়েছিলেন। শুরু হল আরও এক কঠিন লড়াই।
দেশে তখন সেনা শাসন। যুবক লুলা ঠিক করলেন শ্রমিক শ্রেণির নেতা হবেন। সেনা শাসনের বিরুদ্ধে শুরু করবেন লড়াই। বিশ্বাস করেছিলেন, এই লড়াই মূলত শ্রমিক শ্রেণির হলেও আগামীদিনে সেটা মহাবিপ্লবের আকার ধারণ করবে। সেনা-শাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ডাক দিলেন ধর্মঘটের। ব্যাপক সাড়া, যা দেখে থ হয়ে গিয়েছিল সামরিক শাসকেরা। ১৯৮০ সালে আত্মপ্রকাশ করল এক ট্রেড ইউনিয়ন নেতার হাতে তৈরি রাজনৈতিকদল ওয়ার্কার্স পার্টি। নয় বছর বাদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দল প্রার্থী দাঁড় করায়। ৮৯ সাল থেকে ৯৮ – এই সময়ের মধ্যে তিনবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়েছিল। প্রতিবারেই ব্যর্থতা।
প্রথম সাফল্য ২০০২ সালে। চার বছর বাদে আবার।
বিপ্লব দেখল ব্রাজিল।