নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যত দিন যাচ্ছে ততই যেন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে চিনের করোনা পরিস্থিতি। একদিকে যেমন লাগামছাড়া হারে বাড়ছে করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা, অন্যদিকে তেমন করোনার সংক্রমণ রুখতে একের পর এক শহরে জারি হচ্ছে লকডাউন। এর জেরে এই মুহূর্তে চিনে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। কিন্তু তারপরেও কোনওভাবে কমানো যাচ্ছে না করোনার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। মঙ্গলবারও চিনে করোনায় একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এর মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা চিনের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ের। জানা যাচ্ছে, গত একদিনে শুধুমাত্র সাংহাইতেই ৪৪৭৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরেই এই শহরে আরও কঠোর বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে শুধুমাত্র করোনা পরীক্ষা করানোর জন্যই কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন। বাড়ির পোষা কুকুর বেড়ালকে ঘোরাতে বাড়ির বেসমেন্ট কিংবা পার্কিংয়ের জায়গাতেও আসা যাবে না।
জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি এই বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে পুদং জেলার ওপর। ওই এলাকায় অনেক অভিজাত মানুষের বাস। এমনকি চিনের সবথেকে বড় স্টক এক্সচেঞ্জের বাড়িও রয়েছে ওই এলাকায়। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকাতেই করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সবথেকে বেশী। হু হু করে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। আর তাই ওই এলাকার সমস্ত বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকি বাড়ির সামনে, কিংবা পাকিংয়ের জায়গায় বা লনে পর্যন্ত আসতে নিষেধ করা হয়েছে তাঁদের। এর আগে বাড়ি থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলেও পার্কে কিংবা লবিতে ঘোরাফেরা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষদের। কিন্তু করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবার সেই সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে।
কিন্তু বিধিনিষেধ যাই জারি করা হোক না কেন, চিনের করোনার সংক্রমণ কোনও কিছুরই বাধা মানছে না। মঙ্গলবার চিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৮৮৬। এর মধ্যে শুধুমাত্র সাংহাইতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৭৭। তার আগে দিনেও সাংহাইতে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৩৫০০তে। অর্থাৎ মাত্র একদিনেই চিনের এই শহরে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় হাজার বেড়েছে।