নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের শহরে শহরে বাবা-মায়েদের(Parents) মধ্যে ছেলে-মেয়েকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে(English Medium School) পড়ানোর প্রবণতা ক্রমশই বেড়ে চলেছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শহর এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যাও। সেখানে ছেলেমেয়ের পড়াশোনা চালাতে গিয়ে মোটা অঙ্কের মাইনে সহ অনান্য খরচ সামলাতে হলেও তা থেকে পিছু পা হচ্ছেন না বাবা-মারা। কেউ কেউ তো রীতিমত ঘটি-বাটি বন্দক রেখেও ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। আর তার জেরেই দেখা যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে শহুরে এলাকায় সরকারি বা সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যম স্কুলে ক্রমশ কমছে পড়ুয়ার(Students) সংখ্যা। কিন্তু সেখানেই শিক্ষক-শিক্ষিকার(Teachers) সংখ্যা বেশ বেশি থেকে যাচ্ছে। আবার গ্রামের স্কুলগুলিতে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়া কমে যাচ্ছে পর্যপ্ত শিক্ষিক-শিক্ষিকা না থাকায়। এবার এই সমস্যার সমাধানে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। শহরাঞ্চলের যেসব স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা নগণ্য, সেখানকার শিক্ষকদের গ্রামে বদলি আবশ্যিক করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার।
আরও পড়ুন টানা ৬দিন শিয়ালদা থেকে বাতিল ৩১৬টি ট্রেন
জানা গিয়েছে, উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে General Transfar বা তার আগে বিশেষ বদলির মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকা ছেড়ে শহরের স্কুলগুলিতে ভিড় জমিয়েছিলেন এক শ্রেণির শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকদের একটা বড় অংশের দাবি, ব্যক্তিগত সমস্যার চেয়েও শহরের স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবনযাত্রার টানেই বদলিগুলি নেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশকে হাতিয়ার করে তাঁদের ফের গ্রামমুখী করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে সব শহরাঞ্চলে থাকেন তার আশপাশের পঞ্চায়েত এলাকার স্কুলেই আগে তাঁদের বদলি দেওয়ার চেষ্টা হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের কোনও ওজর-আপত্তি যে বরদাস্ত করা হবে না, তা নিশ্চিত করছেন আধিকারিকরা। আপাতত উচ্চ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলির জন্য এই নিয়ম আনা হলেও পরবর্তী কালে প্রাথমিকের জন্যও এই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য শিক্ষাদফতর।
আরও পড়ুন গ্রাম বাংলায় Online-এ মিলবে বাড়ি তৈরির অনুমোদন
কিছুদিন আগে কলকাতার হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলির শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তখন তিনি ছাত্রস্বার্থের কথা মাথায় রেখে উদ্বৃত্ত শিক্ষকদের গ্রামের দিকে পাঠানোর কথা বলেন। শিক্ষাদফতরের তরফে সম্প্রতি একটি তালিকা আদালতে পেশ করা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, ৮ হাজার ২০৭টি স্কুলে ৩০-এর নীচে রয়েছে পড়ুয়ার সংখ্যা। আদালত পরামর্শ দিয়েছিল, ধাপে ধাপে ওই স্কুলগুলি বন্ধ করার পথে হাঁটতে পারে রাজ্য। যদিও সে বিষয়ে সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে প্রয়োজন অনুসারে শিক্ষকদের বদলি করার জন্য আদালতের নির্দেশেই নয়া রূপরেখা তৈরি করেছেন তাঁরা। সেই মতো সার্কেল, ব্লক, মহকুমা এবং আন্তঃজেলা ট্রান্সফার হবে।