নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলা চলচ্চিত্র জগতে একের পর এক দুঃসংবাদ। চলতি বছরেই প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি পরিচালক তরণ মজুমদার, গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র। যাঁদের জায়গা হয়তো কোনোদিনও পূরণ হবার নয়। আজও তাঁদের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ টলিউড। এর রেশ কাটতে না কাটতেই টলিউডে ফের শোকসভা। আজ ভোর ৪ টে ৫ মিনিট নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন অভিনেত্রী সোনালী চক্রবর্তী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৯ বছর।অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন অভিনেত্রীর তারকা স্বামী শংকর চক্রবর্তী। বাংলা চলচ্চিত্রে জগতে তাঁর কৃতিত্বের অন্ত নেই। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একাধিক সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। প্রসেনজিৎ, চিরঞ্জিত, অভিষেক, তাপস পাল, রচনা-ফেরদৌস-সহ একাধিক সুপারহিট তারকার ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে, ‘দাদার কীর্তি’, সংসার সংগ্রাম, হার জিত ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি জননী ধারাবাহিকেও অভিনয় করেছেন।
মৃত্যুর আগে তিনি শেষ ‘গাঁটছড়া’ অভিনয় করে গিয়েছেন। কিন্তু সেখানেও দীর্ঘদিন কাজ করতে পারেন নি তিনি। গাঁটছড়ার শ্যুটিং চলাকালীনই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা টলিপাড়া। পাশাপাশি গোটা বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM MAMATA BANERJEE) সোনালি চক্রবর্তীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি একটি পোস্টের মাধ্যমে অভিনেত্রীকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাঁর পোস্টে লেখা ছিল, ‘বিশিষ্ট অভিনেত্রী সোনালি চক্রবর্তীর প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র দাদার কীর্তি, সংসার সংগ্রাম ইত্যাদি। চলচ্চিত্র ছাড়াও জননী, গাঁটছড়া ধারাবাহিকে তিনি অভিনয় করেছেন। তাঁর মৃত্যু অভিনয় জগতের একটি বড় ক্ষতি। আমি সোনালি চক্রবর্তীর স্বামী শংকর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এছাড়াও অভিনেত্রীর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে অভিনেত্রী বিদিপ্তা চক্রবর্তী একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “অসময়ে চলে গেলন। খুবই দুঃখের খবর। যদিও অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এটাই হয়তো নিয়তির শেষ পরিণতি ছিল। যে ধরণের কঠিন অসুখ করেছিল তাতে এই রকম খারাপ কিছু একটা ঘটে যাবে সেটা যে একেবারে অস্বাভাবিক এমনটা নয়। তবে কাছের মানুষদের হারানোর কষ্টটা তো ভোলা যায় না। লক্ষ্মী পুজোর দিনই শংকর দার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। এত বছরের চেনা জানা। ছোট্টবেলা থেকে দেখছি। সেই থিয়েটারের যুগ যখন একসঙ্গে যখন সোনালি দি আর শংকর দা থিয়েটার করতেন তখন থেকে চিনি। এরপর ওঁদের বিয়ে হল। আমার মেয়ে আর ওঁদের মেয়ে সাজি একই স্কুলে পড়ে। শঙ্করদা আর সাজি খুবই চেষ্টা করেছিল। যদিও শেষ রক্ষাটা আর হল না। কী আর বলব…খুবই খারাপ খবর।” উল্লেখ্য, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শুক্রবার সোনালি চক্রবর্তীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিন্তু, জানা যায় হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর পেটে তাঁর আবারো ফ্লুইড জমতে শুরু করে। সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু, শেষ রক্ষা আর হল না।