নিজস্ব প্রতিনিধি: একরত্তি মেয়ের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আহিরীটোলার বধূর কোল আলো করে এল দ্বিতীয় সন্তান। কয়েকঘণ্টার ব্যবধানে সন্তানের জন্ম-মৃত্যুর সাক্ষী থাকার এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হলেন মা। এই মুহুর্তে তাঁকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না পরিজন ও প্রতিবেশীরা। তাঁকে কী বলবেন, ‘হতভাগ্য’ না ‘সৌভাগ্যবতী’ এই প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না কেউ। এক মেয়ের মৃত্যুর কয়েকঘণ্টার মধ্য়ে তাঁর কোল আলো করে এল আরেক মেয়ে। আর সদ্যজাতকেই আঁকড়ে ধরে অঝোরে কেঁদে চলেছেন আহিরীটোলার ভেঙে পড়া বাড়ির বাসিন্দা গঙ্গা ঘোড়ুই।
বুধবার অঝোর বৃষ্টির মধ্য়েই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বহু পুরোনো জরাজীর্ণ একটি বাড়ি। আহিরীটোলা লেনের ওই বাড়ি থেকে ধাপে ধাপে সকলকেই উদ্ধার করা হয়। সেখানেই ছিলেন সন্তানসম্ভবা মহিলা। তাঁর পাশেই ঘুমোচ্ছিল আরেক মেয়ে, যার বয়স বছর তিনেক। ওই সন্তানসম্ভবাকে প্রথমে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সন্তানসম্ভবা হওয়ায় তাঁকে ভর্তিও নেওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ পর ওই ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করা হয় তিন বছরের মেয়েটিকে। কিন্তু আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে এলে মৃত্যু হয় ওই একরত্তির।
খবর পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন গঙ্গা। এরপরই চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন সিজারিয়ান অপারেশন করে তাঁর গর্ভস্থ সন্তানকে প্রসব করানোর। সেইমতো বিকেলের দিকে আরেক কন্য়াসন্তানের জন্ম দিলেন গঙ্গা ঘোড়ুই নামে ওই মহিলা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মা ও সদ্য়জাত দু’জনই সুস্থ রয়েছে। তবে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েও আনন্দের পরিবর্তে বাকরুদ্ধ ওই মহিলা। আনন্দ ও দুঃখের টানাপোড়েনে জীবনের অনুভূতিটুকুই যেন হারিয়ে ফেলেছেন গঙ্গা। অপরদিকে আরেক সন্তানের জনক হয়েও চোখের জলে ভাসছেন গঙ্গার স্বামী সুশান্ত ঘোড়ুই।