নিজস্ব প্রতিনিধি: সাইবার প্রতারণার(Cyber Crime) শিকার হল কলকাতারই(Kolkata) ৭জন পড়ুয়া। ‘তরুণের স্বপ্ন’(Taruner Swapna) প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) কোভিডের সময়ে চলা লকডাউনের মধ্যেই বাংলার একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার রীতি চালু করেন। মূলত এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল লকডাউন কালে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী পড়ুয়ারা যেন তাঁদের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন অনলাইনের মাধ্যমে। সেই কারণেই পড়ুয়াদের নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাজ্য সরকারের তরফে ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া শুরু হয়। এখনও রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সূত্রে কিছুদিন আগেই রাজ্যের তরফে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের ট্যাব(Tab) কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন কলকাতার মানিকতলা থানা(Maniktala PS) এলাকায় ৭জন পড়ুয়া অভিযোগ করেছে যে তাঁদের টাকা অন্য কেউ তুলে নিয়েছে।
আরও পড়ুন সিবিআই তলবে নিজাম প্যালেসে এসএসসি’র ২ প্রাক্তন চেয়ারম্যান
জানা গিয়েছে, কলকাতার মানিকতলার একটি স্কুলে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে নয়জন পড়ুয়ার নামে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে রাজ্য সরকার মোট ৯০ হাজার টাকা পাঠায়। কিন্তু এখন অভিযোগ উঠেছে, ৭জন পড়ুয়ার জন্য বরাদ্দ ৭০ হাজার টাকা অন্য কেউ তুলে নিয়েছে। সেই ঘটনার জেরে মানিকতলা থানা ও লালবাজারের সাইবার শাখায় অভিযোগও দায়ের হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে যে ওই ৭জন পড়ুয়ার নামের পাশে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর কেউ বা কারা বদলে দিয়েছে। তার জেরে রাজ্য সরকারের পাঠানো টাকা ওই ৭জন পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না এসে অন্যের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। এই বিষয়ে মানিকতলার বাগমারি এলাকার ওই স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ নিখিলকুমার কুণ্ডু জানিয়েছেন, দ্বাদশ শ্রেণির ৯জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে জমা পড়ার কথা থাকলেও কেউ বা কারা তাদের নামের পাশে থাকা অ্যাকাউন্ট নম্বর বদলে দিয়েছে। এদের মধ্যে ৭জনের টাকা সেই পরিবর্তিত অ্যাকাউন্ট নম্বরে চলে গিয়েছে, যার সঙ্গে ওই পড়ুয়াদের সম্পর্ক নেই। বাকি দু’জনের ক্ষেত্রে জালিয়াতি করে যে অ্যাকাউন্ট নম্বর বসানো হয়েছিল, তাতে গরমিল থাকায় টাকাটা ট্রান্সফার হয়নি। বিষয়টি তিনি শিক্ষা দফতরকেও জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন সিঙ্গুরে মমতাই ঠিক, বুঝিয়ে দিলেন নরেন্দ্র, ধাক্কা বামেদের
মানিকতলার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে সাইবার বিশেষজ্ঞদের ধারনা স্কুলেরই কেউ এই ঘটনায় জড়িয়ে। তাঁদের বক্তব্য, বাংলার শিক্ষা পোর্টালে নাম-অ্যাকাউন্ট নম্বর আপলোড করার জন্য স্কুলের প্রধানদের একটি করে আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কোনও ইন্টারনেট পার্লার বা সাইবার ক্যাফেতে সেই আপলোডের কাজ চলছিল কিনা তা দেখতে হবে বা যে কর্মীকে দিয়ে প্রধান শিক্ষক নাম আপলোডের কাজ করাচ্ছিলেন, তিনি কোনও ভাবে সকলের অগোচরে আইডি-পাসওয়ার্ড হাতিয়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নম্বর বসিয়ে দিয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই অ্যাকাউন্টগুলি কোনও ভুয়ো লোকের নামে খোলা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।
