নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: অনেকের জীবনের বড় স্বপ্নই হচ্ছে সরকারি চাকরি পাওয়া। মাস পয়লায় মাইনে, সুবিধা, অবসরের পরে নিশ্চিন্ত জীবনযাপন, আরও কত কী সুবিধা। অথচ শুধুমাত্র শান্তিতে ঘুমোবেন বলেই সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দিলেন সুনীল কুমার দে নামে এক ব্যাক্তি। না মোটেও গাঁজাখুরি গপ্পো নয়। সত্যিই এমনটা ঘটেছে। বাংলাদেশের রাজবাড়ি জেলায়।
১৯৯৬ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে সিপাহী পদে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজবাড়ি জেলার বানীবহের বাসিন্দা সুনীল কুমার দে। কিন্তু চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরেই দু চোখের ঘুম উবে গিয়েছিল। তবুও সরকারি চাকরি বলে কথা! তাই কষ্ট করে, ঘুমকে ত্যাগ করেই চাকরি করে যাচ্ছিলেন। এক সময়ে সাব ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পান। দায়িত্ব বেড়ে যায়। কাজের চাপে ঘুমের দফারফা হয়। ডিউটি শেষে অনেক সময় ঘুমোতে ঘুমোতে ভোর হয়ে যেত।
কিন্তু শান্তিতে ঘুমোনোর উপায় ছিল না। শান্তির ঘুমে বাগড়া দিত চাকরি। সময়ে-অসময়ে ডাক পড়ত ডিউটিতে যাওয়ার। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন চাকরি ছেড়ে দেবেন। তবে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের চাপে তা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে ঘুমের কারণে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচ বছর আগে ২০২১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন সুনীলবাবু। অবসরের পরে বাড়ির পাশে বানীবহ বাজারে ওষুধের দোকান খোলেন। এখন আর তার শান্তির ঘুমে কেউই বাগড়া দেয় না। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে তার পরে দোকান খোলেন। ঘুমের জন্য চাকরি ছাড়ায় কোনও অনুশোচনা নেই সুনীল দে’র। তাঁর কথায়, ‘ঘুমের কারণে চাকরিটা আর করতে পারলাম না। এখন আর ডিউটির কোনও চাপ নেই। স্বাধীনভাবে ঘুমিয়ে তারপর দোকান খুলি।’ সুনীলের স্ত্রী তাপসী দে প্রথমে স্বামীর সিদ্ধান্ত মানতে না পারলেও কোনও অশান্তির পথে হাঁটেননি। কথায়-কথায় জানালেন, ‘দুপুর বারোটা পর্যন্ত না ঘুমোলে অসুস্থ হয়ে পড়েন স্বামী।’