এই মুহূর্তে




দুর্গা পুজোর সময় কীভাবে শোক পালন করেন ‘মহিষাসুরের বংশধরেরা’ ?




নিজস্ব প্রতিনিধি : দুর্গা পুজো আসতেই যখন ভক্তদের জীবনে আনন্দের সীমা আর ধরে না তখনই শোক পালন করেন অসুর বংশীয় আদিবাসীরা। দু্র্গা পুজোর সময় ঘরের দরজা জানলা বন্ধ রাখেন তাঁরা। যাতে কোনভাবে পুজোর ঢাক ঢোলের আওয়াজ তাঁদের কানে না পৌঁছোয়। শুনলে অবাক হবেন এভাবেই শোক পালন করেন অসুর বংশীয় আদিবাসীরা। দুর্গোৎসবের উল্লাস যাতে তাঁদের কান পর্যন্ত কোনও ভাবেই না পৌঁছোয় তাই ঘরের বাইরে পা রাখেন না তাঁরা। এইসময়টা তাঁদের জন্য হল শোকের সময়।

‘অসুর’ হল ভারতের একটি বিশেষ আদিবাসী উপজাতি। জানা গিয়েছে, লোহা গলানোর কাজ করতেন অসুররা। পোশাকি ভাষায় বলতে গেলে, এঁরাই ভারতের আদিম মেটালার্জিস্ট, ধাতুরসায়নবিদ। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার এই তিন রাজ্যের সরকারি তপশিলি উপজাতির তালিকার একেবারে প্রথম নামটিই হল ‘অসুর’ আদিবাসী সমাজ।

মহিষাসুর হল প্রকৃত সম্রাট :  তাঁদের লোককথা অনুযায়ী, আর্য দেবী দুর্গা এই সময়েই তাঁদের রাজা মহিষাসুরকে ছলনা করে হত্যা করেছিলেন। মহিষাসুর সম্রাটকে এভাবে হারানোর শোক হাজার হাজার বছর ধরেও ভুলতে পারেননি তাঁরা। এই নিয়ে তাঁদের দাবি, আর্যরা ভারতে আসার পরে কোনোভাবেই মহিষাসুরকে পরাজিত করতে পারছিল না। তারা তখন এক কৌশল নিয়েছিল। মহিষাসুরকে বধ করার জন্য তারা এক নারীকে ব্যবহার করে। সেই অপরুপা নারী ছলনা করে মহিষাসুরকে বধ করে।

কেন মহিষাসুর নিহত হয়েছিল দু্র্গার হাতে : এর কারণ হিসেবে অসুরদের দাবি, রাজা মহিষাসুরের সময়ে মেয়েদের অত্যন্ত সম্মান দেওয়া হত। এমনকী রাজা মহিষাসুর মেয়েদের সঙ্গে অস্ত্র ধারণ করতেন না। নারীর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণে ঘোর বিরোধী ছিলেন মহিষাসুর। কিন্তু হিন্দু পুরাণে মহিষাসুরকেই ‘ভিলেন’ হিসেবে দেখানো হয়।

কীভাবে তাঁরা শোক পালন করে : চিরাচরিত ভাবে দুর্গাপূজার সময়টাতেই মহিষাসুরের জন্য শোক পালন করে থাকে এই আদিবাসী সমাজ। কোথাও অরন্ধন পালন করা হয়, কোথাও জানলা-দরজা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকেন আদিবাসীরা, যাতে দুর্গাপূজার যে উৎসব, সেই মন্ত্র বা ঢাকের শব্দ যাতে তাদের কানে না যায়।

এককথায় দুর্গাপূজার এই সময়ে তারা অশৌচ পালন করেন তাঁরা। এবং বাদ্যযন্ত্র নিয়ে নাচও হয় তাঁদের। দাসাই নাচ করেন তারা, যেখানে পুরুষরা নারী যোদ্ধার ছদ্মবেশ ধারণ করে কান্নার সুরে গান গেয়ে গ্রামে গ্রামে ঘোরেন।

এই নিয়ে, মহিষাসুরকে ‘ভিলেন’ বানানোর মেনস্ট্রিমের এই চিরাচরিত অভ্যাস নিয়ে পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ‘অসুর ও দেবতা কিন্তু একই বাপের ছেলে’! একইসঙ্গে তিনি বলেন, দেবতাদের বিপরীতে অসুরদের স্থাপিত করা হয়েছে। যা কিছু শুভ, যা কিছু মঙ্গলকর তা দেবতা, আর এই দেবতার বিপরীতে যা কিছু অশুভ, যা কিছু অমঙ্গলকর তাই অসুর। কিন্তু বিষয়টি আদৌ তেমন নয়।’

১৯৯১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে অসুর সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা ৪৮৬৪ জন। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারেই এঁদের সংখ্যা ছিল ৩১০৮ জন। ঝাড়খণ্ডের রাঁচি, সাঁওতাল পরগনার মতো জায়গা থেকে অসুরদের উত্তরবঙ্গে এনেছিল ইংরেজরা। যদিও দীর্ঘদিনের বসবাস করায় উত্তরবঙ্গে অসুরদের কথ্যভাষা বদলে গিয়েছে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

বারাসতের দক্ষিণপাড়ায় ৪৫৪ বছরের শিবের কোঠার দুর্গাপুজো সংকল্পিত হয় যোধাবাঈয়ের নামে

পুজো মানেই ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক আর শাড়ি: মধুমিতা সরকার

গাজায় ইজরায়েলের হত্যালিলার প্রতিবাদে ওয়াশিংটনের রাস্তায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ফিলিস্তিনি যুবকের

একই বৃন্তে দুইটি কুসুম, বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে নামাজ পড়া মুসলিমের মাথায় ছাতা ধরল হিন্দু পুলিশ কর্মী

বিয়ে হয়েছিল 57 বছর আগে, ভিডিও হাতে পেলেন 2024-এ

পুলিশকে দেখে খালে ঝাঁপ, ৩ ঘন্টার চেষ্টায় কচুরিপানার ভেতর থেকে আটক ধর্ষণের আসামি

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর