নিজস্ব প্রতিনিধি, ওয়াশিংটন: মাতৃগর্ভে একই সঙ্গে বেড়ে উঠেছিলেন। একই সঙ্গে পৃথিবীর আলোও দেখেছিলেন দুই বোন। কিন্তু জন্মের পরেই অদৃষ্টের পরিহাসে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন দুজনে। শেষ পর্যন্ত জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকের দৌলতে দীর্ঘ ১৯ বছর বাদে ফের এক হয়েছেন দুই সহোদরা। শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে জর্জিয়ায়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’ জানিয়েছে, ‘২০০৫ সালে জর্জিয়ার এক হাসপাতালে জন্ম হয়েছিল অ্যামি খাভিশা ও আনো সারতানিয়ার। যমজ সন্তানের জন্মের পরেই কোমায় চলে যান অ্যামি ও আনোর মা আজা শেনি। জীবন্মৃত অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে। কয়েক মাস বাদে চিকিৎসকরা শেনির পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আশা ছেড়ে দেন। বিপাকে পড়ে সদ্যোজাত দুই শিশু সন্তানকে দুটি পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেন অ্যামি ও আনোর বাবা। দুই পৃথক পরিবারেই বেড়ে ওঠেন দুজনে।
বছর সাতেক আগে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অ্যানোকে দেখে খানিকটা বিস্মিত হয়েছিলেন অ্যামি। ‘জর্জিয়াস গট ট্যালেন্ট’ নামের ওই অনুষ্ঠানে ঠিক তার মতো হুবহু দেখতে এক কিশোরী নাচছে। কৌতুহল চাপতে না পেরে মাকে বিষয়টি জানিয়েছিল অ্যামি। যদিও সন্তানের আসল পরিচয় প্রকাশের ভয়ে সত্যি কথা জানাননি অ্যামির মা। বিষয়টি তখনকার মতো ধামাচাপা পড়ে যায়। কয়েক বছর পর আরেকটি অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে। ২০২১ সালের নভেম্বরে অ্যামি খেয়াল করেন তার মতোই দেখতে একটি মেয়ে টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। কৌতুহল চাপতে না পেরে প্রোফাইলে গিয়ে অ্যামি জানতে পারেন মেয়েটির নাম আনো সার্তানিয়া। তিনি থাকেন ৩২০ কিলোমিটার দূরের শহর তিবিলিসিতে। এর পরে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমেই দেখা করেন দুজনে। এর পরে ডিএনএ পরীক্ষা করে জানতে পারেন, অ্যামি ও অ্যানো আসলে দুই বোন। একই রক্ত বইছে তাদের শরীরে। দুই বোন এর পরে লাইপজিগের একটি হোটেলে জন্মদাত্রী মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। যদিও বাবাকে খোঁজার চেষ্টা চালাননি দুই বোন।