নিজস্ব প্রতিনিধি : ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের পর স্বামী বিবেকানন্দের কাছে দ্বিতীয় শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ভগিনী নিবেদিতাকে চিঠি লিখে এই অকপট স্বীকারোক্তি করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। জানা যায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁর জীবদ্দশায় বিধবাদের পুনর্বিবাহ প্রথা চালু করেছিলেন। বিদ্যাসাগরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্বামীজি।
রাজা রামমোহন রায়ের পর সমাজ সংস্কারক হিসাবে যিনি সমাজের বুকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন, তাঁর নাম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বিদ্যাসাগরের দৃপ্ত স্বদেশিকতা, বিপুল কর্মোদ্যম স্বামীজিকে প্রভাবিত করেছিল। স্বামীজির সময়ে সমাজের বুকে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন ফেলেছিল বিধবাদের পুনর্বিবাহ প্রথা। এই আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়ে বিদ্যাসাগরকে ‘বিধবাবিবাহের প্রবর্তনকারী মহাবীর’ হিসাবে অভিহিত করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। এই প্রসঙ্গে স্বামীজি জানিয়েছিলেন, হিন্দু বিধবাদের সেইসময়কার শোচনীয় অবস্থা নিয়ে তিনি কম যাতনাবোধ করেননি। তাঁর মতে, সামাজিক ব্যাধির প্রতিকার বাইরের কোনও চেষ্টার দ্বারা হবে না। শিক্ষাদানের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে এই ব্যাধি নিরাময়ের চেষ্টা করতে হবে।
বিদ্যাসাগরের প্রতি স্বামী বিবেকানন্দের শ্রদ্ধার অন্যতম কারণ ছিল, বিধবাদের বিবাহ করার স্বাধীনতা দাবি করে তাঁদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা। সেইকারণে স্বামীজি নিজেও মনে করতেন, নারীদের যোগ্যতার সহিত সমাজে উঠে দাঁড়াতে হবে। কোনও অবনত হলে চলবে না। নারীদের উদ্দেশ্যেই স্বামীজি বলতেন, ‘জাগো জাগো। তাহলেই সংকল্পগুলি আপনা থেকেই বর্ধিত ও কার্যে পরিণত হয়।‘