নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: গুজরাত দাঙ্গার সময়ে গণধর্ষণের শিকার হওয়া বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির প্রশ্নে ফের সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল গুজরাত সরকার। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বি ভি নাগরত্না ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, অন্য বন্দিদের পরিবর্তে বেছে বেছে কেন বিলকিসের ধর্ষকদেরই মুক্তি দেওয়া হল? কেন অন্য বন্দিরা সংশোধিত হওয়ার সুযোগ পেলেন না।
গত বছরের ১৫ অগস্ট স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গুজরাত দাঙ্গার নারকীয় শিকার বিলকিস বানোর ১১ ধর্ষককে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাতের বিজেপি সরকার। মুক্তিপ্রাপ্তরা সবাই গেরুয়া শিবিরের কট্টর সমর্থক ও নেতা হিসেবে পরিচিত। বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে গোটা দেশেই নিন্দার ঝড় উঠেছিল। গুজরাত সরকারের পাশাপাশি ওই মুক্তিতে অনুমোদন দেওয়ায় সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে দায়ের হয়েছে একাধিক মামলা।
এদিন ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চে প্রশ্ন তোলে, মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে দোষীদের যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছিল। কোন যুক্তিতে মুক্তি দেওয়া হল দোষীদের? অন্য বন্দিরা কেন সেই সুবিধা পেলেন না? ভুল সংশোধন, সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার সুযোগ তো সকলের প্রাপ্য! কতজন সেই সুযোগ পেয়েছেন? তাহলে জেলগুলি উপচে পড়ছে কেন? এ বিষয়ে মুক্তিপ্রাপ্তদের নিয়ে পরিসংখ্যানও তলব করেছে শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের সবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরে নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাত জুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বিলকিস। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে হিন্দুত্ববাদী নরপিশাচদের হাতে ধরা পড়েন। গণধর্ষণের শিকার হন বিলকিস। তাঁর চোখের সামনে শিশু সন্তান-সহ পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করা হয়।