নিজস্ব প্রতিনিধি: উনিশ এবং একুশের ভোটে বিজেপির(BJP) ফলাফল দেখে ওয়াকিবহাল মহল আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যা গেরুয়া শিবির বাংলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। সেই পরিকল্পনা উনিশ ও একুশের ভোটে উত্তরবঙ্গে সফল হলেও তা ধাক্কা খেয়েছে দক্ষিণবঙ্গে এসে। কেননা জঙ্গলমহলে একুশের ভোটে আর বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি। সেখানে জমি ফিরে পেয়েছে তৃণমূল। আর যেই রাজনীতির হিসাব মিলল না ওমনি বাংলার আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে মোদি বাহিনী। নরেন্দ্র মোদির সরকার(Modi Government) দেশে একজন আদিবাসী সমাজের মহিলাকে দেশের রাষ্ট্রপতি পদে তুলে ধরলেও বাংলার বুকে মোদি সরকার আদিবাসীদের উন্নয়নে হাতগুটিয়ে বসে রয়েছে। এর একটা বড় উদাহরণ পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার উত্তর সদর মহকুমার ভাতার(Bhatar) ব্লকের কর্জনা এলাকার ডাঃ বি আর আম্বেদকর আবাসিক শিক্ষা নিকেতন। যা এখন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। আর সেটাও কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য।
কর্জনা এলাকায় ১৭ কাঠা জায়গার ওপর বর্ধমান-কাটোয়া জেলা সড়কের ধারে একসময় গড়ে উঠেছিল ডাঃ বি আর আম্বেদকর আবাসিক শিক্ষা নিকেতন নামের এই স্কুল। আদিবাসী ও তফসিলি জাতির গরীব ঘরের ছেলেমেয়েরা যাতে এই স্কুলে পড়াশোনা করতে পারে সেই লক্ষ্যেই এই স্কুল(Tribal School) স্থাপনা করা হয়েছিল। ক্লাস ফাইভ থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত এখানে পড়াশোনার সুযোগ ছিল। ছেলেমেয়ে একসঙ্গে এই স্কুলে পড়তে পারত। ছিল ৭টি শ্রেণিকক্ষ, অফিস, হলঘর এমনকী শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের আবাসন। সেই সঙ্গে ছিল হোস্টেল। এলাকায় স্কুল তৈরি হওয়ায় স্থানীয় ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্কুল ড্রপআউটও কমে গিয়েছিল। স্কুলে একসময় প্রায় ৫০০ পড়ুয়া ছিল। ছিলেন ১৫জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। একসময় এই স্কুল চালানোর জন্য নিয়মিত কেন্দ্রের আর্থিক অনুদানও আসত। কিন্তু এক সময় সেই অনুদান আসা বন্ধ হয়ে যায়। অর্থাভাবে ধুঁকতে থাকে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বেতন না পেয়ে কাজ ছেড়ে দেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে স্কুলের কর্মীরা। তার জেরে স্কুল ছাড়ে পড়ুয়ারাও। এখন গোটা স্কুল ভবন ও চত্বর কার্যত পোড়ো ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। দিনের আলোতেও সেখানে এখন গা ছমছমে পরিবেশ। চারপাশে আগাছার জঙ্গল। চারপাশে গাছগাছালি আর আগাছার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন একা বি আর আম্বেদকর।