নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার রাজ্যপালকে(Governor) আর বাংলার কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের(Universities) আচার্য(Chancellor) পদে রাখছে না রাজ্য সরকার। এবার থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী(Chief Minister)। বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভায়(State Cabinet) এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। খুব শীঘ্রই এই মর্মে আইন পাশ করা হবে রাজ্য বিধানসভায়। এমনটাই জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সন্দেহ নেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত জগগীপ ধনখড়ের কাছে একটা বড় ধাক্কা। এদিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের যত বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার আচার্য পদে রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় বিল আনবে সরকার।’
উল্লেখ্য কেরালা ও তামিলনাড়ুতে একই রকম বিল বিধানসভায় পেশ করেছে সেখানকার সরকার। অর্থাৎ সেখানেও সেখানকার রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য পদে আর রাজ্যপালকে রাখা হচ্ছে না। সেখানে ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়োগ করা হচ্ছে। কার্যত পদাধিকারবলেই সেই নিয়োগ হচ্ছে। এদিন ব্রাত্য এই কথাও জানান যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পুঞ্চি কমিশন ২০১০ সালে এই ব্যাপারে সুপারিশ করেছিল। তখন বিরোধীদের পক্ষ থেকে সংসদে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য রাজনাথ সিং সমস্ত রাজ্যকে এই সুপারিশ কার্যকর করার কথা বলেছিলেন। এখন সেই নীতিই নেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর এই পরিবর্তনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজি না হলে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে অর্ডিন্যান্স আনার পথও খোলা রাখছে।
সন্দেহ নেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে নতুন করে রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর বিবাদ আরও চরমে উঠবে। কেননা এটা সভবাই বুঝতে পারছেন যে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্যের অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে আধিকারিকদের যেভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছিলেন তাতে করে শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ভীষণ রকম ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিল। উপাচার্যরাও ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছিলেন। এমনকি তাঁরা অপমানিত বোধও করছিলেন। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বার বার অনুরোধ জানানো হয় ধনখড়কে এই ধরনের পদক্ষেপ না নিতে। কিন্তু সে কথা তিনি কানে তোলেননি। এবার কিছুটা বাধ্য হয়েই ধনখড়কে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে সরাবার জন্য এই প্রস্তাব রাজ্য মন্ত্রিসভায় আনল যা এদিন সেখানে অনুমোদন পেয়েছে। এরপর এই প্রস্তাব পাশ করানো হবে রাজ্য বিধানসভায়। সেখানে তা পাশ হলেই তা যাভে রাজ্যপালের কাছে। তিনি এই বিলে সই না করলে জারি হবে অর্ডিন্যান্স, যাতে সই করতে তিনি বাধ্য। সেই অর্ডিন্যান্স জারি হলেই রাজ্যপালের জায়গায় রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য হতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীও।