নিজস্ব প্রতিনিধি: হিমবাহের বরফগলা জলে সৃষ্ট হ্রদ ফেটে বিপুল জলরাশি ধেয়ে আসে তিস্তার বুকে। সেই জলের চাপে ভেঙে যায় সিকিমের একটি বাঁধও। তার জেরেই বিপুল জলরাশি দুরন্ত গতিতে নামতে থাকে তিস্তার পাড় ধরে। গত সপ্তাহে তিস্তায় আসা হড়পা বানের(Teesta Flash Flood Disaster) কারণে সিকিম(Sikkim) বাংলার(Bengal) অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন ও নিখোঁজও হয়েছেন। সিকিম সরকার সে রাজ্যের নিহত বাসিন্দাদের জন্য ৪ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করলেও বাংলার বাসিন্দারা যারা সেই রাজ্যে কর্মসূত্রে গিয়ে বা ঘুরতে গিয়ে মারা গিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন তাঁদের জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেনি। সেই প্রেক্ষাপটেই এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) জানিয়ে দিলেন, তিস্তায় আসা হড়পা বানে এ রাজ্যের যারা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে এককালীন ৩ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কালিঘাটের বাড়ি থেকে ভার্চুয়াল ভাবে জেলার পুজোগুলি উদ্বোধন করেন। জলপাইগুড়ি জেলার পুজোগুলি উদ্বোধনের সময়েই তিনি তিস্তার হড়পা বানের প্রসঙ্গ তোলেন। তখনই তিনি জানান যে, তিস্তায় আসা হড়পা বানের জেরে কালিম্পং জেলা রীতিমত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সিকিম সীমান্তের একটি গ্রাম সম্পূর্ণ ভাবেই ধুয়ে মুছে গিয়েছে। সেখানকার অনেক বাসিন্দাই মারা গিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়াও বাংলার আরও অনেকেই মারা গিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁদের পরিবারকে এককালীন ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, তিস্তায় আসা হড়পা বানের কারণে এখনও পর্যন্য শুধুমাত্র কালিম্পং(Kalimpong) জেলাতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখনও কালিম্পংয়ের বহু এলাকায় ও গ্রামে রাস্তার ওপরঅকোথাও একহাঁটু বালি তো কোথাও কাদাজক জমে রয়েছে। আবার কোথাও বালির নীচে চাপা পড়ে আছে বাড়ি। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এখনও বন্ধ। রাস্তার প্রায় ১০টি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কালিম্পং জেলায় এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ৫৫৩টি। নিখোঁজের সংখ্যা ৩০। এখনও বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি বিধ্বস্ত হয়েছে কালিম্পং-১ ও লাভা ব্লক। এখনও সংশ্লিষ্ট দু’টি ব্লকে চলছে ১০টি ত্রাণ শিবির। দুর্গতর সংখ্যা ১১২০। এই অবস্থায় বিধ্বস্ত কালিম্পংয়ের জন্য অনুদান তো দূরের কথা এখনও কোনও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেনি বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। দুর্গত এলাকায় ওদের নেতা-মন্ত্রীদেরও দেখা নেই। কিন্তু, দুর্গতদের পাশে থেকে রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন জিটিএ চিফ অনীত থাপা। তবে মুখ্যমন্ত্রী এদিন আবারও বুঝিয়ে দিলেন তিনি আছেন পাহাড়বাসীর পাশেই।