নিজস্ব প্রতিনিধি: কেষ্ট গড়ে সভা করতে গিয়ে কেষ্টকে নিয়ে দিদি কিছু বলবেন না এটাও কী হয়! তাই সবার চোখ ছিল এদিন অর্থাৎ রবিবার বীরভূম(Birbhum) জেলার সদর শহর সিউড়ির(Suri) সভা থেকে কেষ্ট থুড়ি বীরভূম জেলা তৃণমূল(TMC) সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে(Anubrata Mondol) নিয়ে কী বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। দেখা গেল কেষ্ট গরবে গর্বিত তিনি। তাই সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাটিয়ে প্রকাশ্যেই আবারও কেষ্ট’র পাশেই দাঁড়ালেন বাংলার সর্বজনীন দিদি। এদিন সিউড়ির সভা থেকে তিনি দৃপ্ত কন্ঠেই জানিয়ে দিলেন, ‘বীরভূমে চক্রান্ত চলছে। কেষ্টকে কতদিন ধরে জেলে ভরে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। আমি তো আসতে আসতে দেখছিলাম, তরুণ প্রজন্ম ওর কথা বলছে। আমি কাউকে শিখিয়ে দিইনি। আমি মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। ও কাজ করেছে, ও কাজ করতে জানে। আর তাই মানুষের মন থেকে ওকে মুছে ফেলতে পারেনি।’ সভায় তখন হাততালির ঝড়। কার্যত সভা থেকে বহুদূরে তিহারের জেলেবন্দী কেষ্ট যেন এদিন নিজের ইমেজের জোরেই ফিরে এসেছেন সস্মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতে।
প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির তিহার জেলে বন্দী রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও ওই জেলেই রয়েছেন। বীরভূমের রাজনীতিতে তাঁর অভাব যেমন বোধ করছে তৃণমূল, তেমনি বোধ করছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই কারণেই সবাই এদিনের সভার দিকে তাকিয়ে ছিল এটা দেখার জন্য যে কেষ্টগড় বীরভূমে দাঁড়িয়ে মমতা কেষ্টকে নিয়ে কী বার্তা দেন জেলাবাসীর পাশাপয়াশি দলের নেতাকর্মীদের। আর সেই বার্তায় দেখা গেল বীরভূম এখনও কেষ্টময়। এদিন কেষ্ট’র হয়ে সাওয়াল করে মমতা বলেন, ‘যদি ওর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকে নিশ্চয় ব্যবস্থা নাও। কিন্তু একই অভিযোগ আপনাদের কতজন নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে? আজ পর্যন্ত একটা ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিয়েছেন? BSF-কে লেলিয়ে দিয়েছেন। চোপড়ায় চারটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কটা টিম গিয়েছে, বিলকিস, দলিতদের ওপর অত্যাচারে কটা টিম গিয়েছিল? বাংলায় শুধু জট পাটানোর চেষ্টা করেন আপনারা, আমরা খোলার চেষ্টা করি। পিএমএলএ নামে কী একটা আইন করে রেখেছে। বিনা বিচারে এক একজনকে বছরের পর বছর জেলে আটকে রেখে যদি তুমি মনে করো ভোট করবে তাহলে তোমরা ভুল ভাবছো। ইমার্জেন্সির সময় ইন্দিরা গান্ধী ২০০০ জনকে জেলে পুরে রেখে ভোট করেছিলেন। কিন্তু তিনি নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। কেষ্ট কাজ করেছে, তাই ওকে জেলে আটকে রেখেছে। কতদিন ধরে জেলে বন্দি, কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে মুছে ফেলা যায়নি। অনুব্রত প্রতিহিংসার শিকার, কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাঁকে জোর করে গ্রেফতার করেছে।’