এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

Godman’র নিদানে ছেলেকে মাটিতে পুঁতে দিলেন বাবা-মা

Courtesy - Google

নিজস্ব প্রতিনিধি: একরত্তি ছেলে বড়ই দুরন্ত। তাকে বাগ মানাতে ব্যর্থ বাবা-মা। চঞ্চল ছেলের মতি ফেরাতে বাবা-মা দ্বারস্থ হয়েছিলেন এলাকারই স্বঘোষিত বাবাজি বা Godman’র। সেই Godman আবার নির্দেশ দেন, চঞ্চল ছেলের মতি ফেরাতে তাকে দামোদরের(Damodar) চরে ফেলে রাখতে হবে। রাতের আঁধারে ছেলেকে দামোদরের চরে ফেলে রেখে বলতে হবে, ‘তোর যে দিকে চোখ যাবে চলে যাবি।’ সেই বাবাজির কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে নিয়ে সেইরকমই করেছিলেন গন্ডমূর্খ বাবা-মা। রাতের অন্ধকারে শিশুটিকে তাঁরা রেখে এসেছিলেন দামোদরের চরে। শুধু তাই নয়, বাবার নিদানে ৯ বছরের ছেলেকে দামোদরের চরে হাঁটু পর্যন্ত পুঁতে রেখে এসেছিলেন তাঁরা। যদিও সেই ঘটনা চোখে পড়ে যায় সেই চরে থাকা জেলেদের(Fishermen), যারা মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁরাই খবর দেন পুলিশকে(Police)। আইনের রক্ষকরা দ্রুত সেখানে গিয়ে উদ্ধার করে ওই শিশুকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে আমাদেরই এই বাংলার বুকে। পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdwan) জেলার দক্ষিণ সদর মহকুমার রায়না থানা(Rayna PS) এলাকার নাটু গ্রাম পঞ্চায়েতের শিয়ালি গ্রামে।

জানা গিয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর রাতে পুলিশের কাছে ওই শিশুর বিষয়টি জানতে পারে রায়না থানার পুলিশ। সেই খবর পেয়ে দ্রুত তাঁরা দামোদরের চরে গিয়ে দেখেন, রাতের ঘন অন্ধকারে ৯ বছরের সেই ছেলে তখন কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসে চাঙ্গা করে। তাকে গরম দুধ খেতেও দেওয়া হয়। সেই সময় শিশুটি জানায়, তাকে সেখানে ফেলে দিয়ে গিয়েছে তার বাবা, মা ও দাদু। এক সাধুর কথামতো তাকে হাঁটু পর্যন্ত বালি খুঁড়ে পুঁতে দিয়ে সবাই ফিরে গিয়েছে আশ্রমে। যাওয়ার সময়ে তার বাবা বলে গিয়েছে, ‘তোর যে দিকে চোখ যাবে চলে যাবি।’ সেটা জেনে সেদিন রাতেই পুলিশ হানা দেয় শিয়ালিতে সেই স্বঘোষিত বাবাজি বা Godman’র আশ্রমে। পুলিশ গিয়ে দেখে, আশ্রমের চারধারে জেলখানার মতো উঁচু পাঁচিল। বড় কারখানার মতো লোহার গেট। সেই গেট বন্ধ থাকায় আশ্রম কর্তৃপক্ষকে খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানায় পুলিশ। ঘণ্টাখানেক বাদে খোলা হয় গেট।

তার পরেও ওই বাবাজির দর্শন পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় পুলিশকে। ৪০ মিনিটের প্রতীক্ষার পরে বাবাজি পুলিশকে জানান, তিনি যা করেছেন তা শিশুটির ভালোর জন্যই এবং অভিভাবকদের অনুরোধে। আশ্রমে থাকা শিশুটির মা সুস্মিতা বিশ্বাসকে সেদিন কোনওরকমে বুঝিয়ে থানায় আনে পুলিশ। ১ নভেম্বর সকালে পুলিশ সুস্মিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জানা যায়, নদিয়ার চাকদহ থানার নরেন্দ্রপল্লি কদমতলায় তাঁদের বাড়ি। শিয়ালি আশ্রমের মহারাজের নির্দেশেই তাঁরা ছেলেকে দামোদরের চরে হাঁটু পর্যন্ত বালিতে পুঁতে দিয়ে আসেন। সুস্মিতার স্বামী অর্কদ্যুতি বিশ্বাস ও বাবা সুব্রত জোয়ারদারও ছিলেন আশ্রমে। কিন্তু পুলিশ দেখে তাঁরা পালিয়ে যান। এরপর গতকালই শিশুটিকে Burdwan Child Welfare Committeeর হাতে তুলে দেয় পুলিশ। ওই কমিটির সদস্যরা শিশুটি ও তার মায়ের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন, আশ্রমের মহারাজের কথায় তাঁরা মোহগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ছেলেটিকে তাঁদের হাতে তুলে দিলে ফের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এর পরেই শিশুটিকে সিঙ্গুরের সরকারি হোমে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।

তদন্তকারী এক অফিসার জানিয়েছেন, ৯ বছরের শিশুটি যথেষ্ট মেধাবী। তার স্মৃতিশক্তিরও প্রশংসা করারই মতো। শিশুটির বাবা, মা, দাদুর বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও রুজু করেছে। মামলা দায়ের হয়েছে ওই আশ্রমের বিরুদ্ধেও। সুস্মিতার থেকে অর্কদ্যুতির মোবাইল নম্বর নেন তদন্তকারীরা। এরপর টাওয়ার লোকেশন ধরে বুধবার রাতে শক্তিগড় থেকে অর্কদ্যুতি ও সুব্রতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সুস্মিতাকেও। বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে ৩ জনকে পেশ করে পুলিশ। বিচারক অর্কদ্যুতির ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন। সুস্মিতা ও তার বাবাকে পাঠানো হয়েছে জেল হেফাজতে। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানান, ‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পরবর্তী তদন্তে যাঁদের নাম আসবে, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

এদিকে ওই বাবাজির আশ্রমের সকলেই পলাতক। গোটা আশ্রমে তালা ঝুলছে। স্থানীয় বাসিন্দা অপর্ণা সাহা বলেন, ‘আশ্রমে ভালো কাজ হতো না। ভালো কাজ হলে সবসময়ে গেট কেন বন্ধ থাকবে? এলাকার লোক সাধুবাবা সম্পর্কে কিছু জানল না, সেখানে বাইরের লোকেদের এত ভক্তি? বহু মহিলাও থাকতেন আশ্রমে।’ আশ্রমের আড়ালে মহিলা পাচারের কোনও চক্র রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি জানিয়েছেন, ‘আশ্রমের এক সাধুবাবার নির্দেশে বাবা-মা তাঁদের ৯ বছরের ছেলেকে কী ভাবে দামোদরের চরে ফেলে রেখে এল, তা ভেবে অবাক হচ্ছি। একটি বাচ্চা চঞ্চল বলে এ ভাবে তাকে রেখে চলে আসবে! এই কুসংস্কারের বিরুদ্ধে স্থানীয় পঞ্চায়েতকে নিয়ে আমাদের লড়াই করতে হবে। আইন আইনের মতো কাজ করবে। পুলিশ তদন্ত করছে।’

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ঘাটালে প্রচারে যেতে কাঞ্চনকে অনুরোধ দেবের

রবিবার কলকাতা তেঁতে পুড়ে যাবে, উত্তরবঙ্গের তিন জেলায় ঝড় -বৃষ্টির পূর্বাভাস

নেই কদর, নেই সম্মান, অসীমের পাশে নেই মতুয়া মহাসঙ্ঘ

‘অমিতাভ বচ্চন আর শত্রুঘ্ন সিনহার ভারত রত্ন পাওয়া উচিত ছিল’ অভিমত মমতার

লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হবে না, আশ্বাস অভিষেকের

কাঞ্চনের সঙ্গে কল্যাণের ব্যবহার  নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীময়ী  

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর