নিজস্ব প্রতিনিধি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (RABINDRANATH TAGORE) লিখেছিলেন ‘কেষ্ট বেচার চোর’। আর অনুব্রত মণ্ডল (ANUBRATA MONDAL) ‘কেষ্ট’ নামে পরিচিত। সেই নিয়ে কত ট্রোল! শুনুন মিম বা ট্রোল মানে স্থূল নয়। এতে হিউমার লাগে। স্থূলের বিপরীত শব্দ সূক্ষ। ওই সূক্ষতাটাই হিউমার। রবি ঠাকুরের ‘পুরাতন ভৃত্য’ কবিতাটি পড়লে এবং ভাবলে যে কেউ বুঝতে পারবেন, সেই চাকর আসলে ভাল মানুষ ছিলেন। যারা অনুব্রতকে হেয় করতে এই বাক্যাংশটি ব্যবহার করছেন, তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে আদৌ মেলে কি এই কবিতা? এটা কি না বুঝেই অতি ‘রবি-ভক্ত’ গিরি নয়? আর দ্বিতীয় প্রসঙ্গ, ‘আমূল’- এর বিজ্ঞাপন।
আজ জন্মাষ্টমী (JANMASHTAMI)। কে না জানে গোপাল মানেই মাখন চোর। জন্মাষ্টমীর দিনে ‘আমূল’ কোম্পানির একটি নতুন বিজ্ঞাপন প্রাকশিত হয়েছে। সেখানে আমূলের মাখনের স্যাচেটের ছবি। আর নিচে লেখা গুরুদেবের সেই বিখ্যাত লাইন ‘কেষ্টা বেটাই চোর’। তা নিয়ে হইচই। ফেসবুকে অনুব্রত মণ্ডলকে আক্রমণ করতে গিয়ে রবি ঠাকুরের সেই বিখ্যাত বাক্যাংশ ভাইরাল হয়েছিল আগেই। আর আজ ‘আমূল’ (AMUL) বিজ্ঞাপনে সেই উদ্ধৃতি দেখে ‘হুজুগ’ বাড়ল আরও। আরে বিজ্ঞাপনের ওপরে লেখা আছে ‘জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা’। কৃষ্ণই (KRISHNA) তো কেষ্ট। সেই কেষ্ট আর এই কেষ্ট গুলিয়ে ফেললে হবে?
অবশ্য, বিজ্ঞাপন তো। তাই এই ‘রমরমা’ সময়ে আমূল ‘চালাকি’ করেই তাদের বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করল রবি ঠাকুরের কবিতার এই বাক্যাংশটি। আর বলাই বাহুল্য, প্রয়াস সফল। তবে অনুব্রত প্রসঙ্গ ও কবিতার ভুল ব্যাখ্যায় আপত্তি জানাচ্ছেন সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিল্পীরা। এই দিক থেকে সবার আগে গর্জে উঠেছে মেদিনীপুর। সঙ্গীত শিল্পী সুপান্থ বসু এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘নিম্ন মেধাতেও মেধা থাকে কিছুটা। এটা কিন্তু শুধু মেধাহীনতা নয়, রুচিহীনতাও বটে। একটু ভাবা দরকার’। আবৃত্তি শিল্পী মোম চক্রবর্তী বলেছেন, ‘কবিতার নির্যাস অনুভব করা দূরের কথা। ভাল করে কবিতাটি পড়েও দেখে না কেউ’।
কবি অভিনন্দন মুখোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘কোন কবিতা কোথায় ব্যবহার করতে হবে, তা না জেনে কবিতা জাহির করা আসলে ব্যাধি’।