নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি মালদা(Malda) জেলার বামনগোলা থানার(Bamongola PS) পাকুয়াহাটে(Pakuyahat) পুলিশের সামনেই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে জুতো পেটা(Molestation) করা হয় চুরির অভিযোগ তুলে। সেই ঘটনায় এবার রাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নিল। বিরোধী ও নির্যাতিতাদের অভিযোগ ছিল ঘটনার দিন সেখানে উপস্থিত থাকা পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার পদক্ষেপ করল বামনগোলা থানার ৪জন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। এই ৪জন হলেন, বামনগোলা থানার IC জয়দীপ চক্রবর্তী, নালাগোলা পুলিশ ফাঁড়ির OC মৃণাল সরকার, পাকুয়াহাট পুলিশ ফাঁড়ির OC রাকেশ বিশ্বাস এবং ASI সঞ্জয় সরকার। এদের আপাতত ‘ক্লোজড’(Police Closed) করা হয়েছে।
আরও পড়ুন মোদির মন্ত্রীই ধরিয়ে দিল মোদির মিথ্যা ভাষণ
পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে ‘বিবস্ত্র’ করে মারধরের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশের একাংশের ভূমিকা। দুই ‘নির্যাতিতা’কে কেন গ্রেফতার করা হয়েছিল, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। তার প্রেক্ষিতে গত বুধবার, ঘটনার পাঁচ দিন পর পাকুয়াহাট ফাঁড়ির OC রাকেশ বিশ্বাস-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব। এর পরই এদিন অর্থাৎ শুক্রবার চার পুলিশ আধিকারিককে ‘ক্লোজ়’ করা হল। পুলিশ সূত্রে খবর, চার জনের কর্তব্যে ‘গাফিলতি’ রয়েছে। যদিও, পাকুয়াহাটের ঘটনায় হইচই শুরু হতেই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ৫ জনকে গ্রেফতার করে। তার মধ্যে তিন জন মহিলাও ছিলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, দুই ‘নির্যাতিতা’কেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। গণপ্রহারের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা আগে বিজেপির আন্দোলনে বামনগোলার নালাগোলা ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ওই দুই ‘নির্যাতিতা’কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেখানেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে নির্যাতিতার পরিবার এবং বিরোধীরা।
আরও পড়ুন Signal বিভ্রাট শিয়ালদা-বনগাঁ শাখায়, দুর্ভোগে নিত্যযাত্রীরা
ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুই ‘নির্যাতিতা’কে গ্রেফতারি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল পুলিশের একাংশের মধ্যেও। প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য মহিলা কমিশনও। প্রশ্ন উঠেছিল— ফাঁড়ি ভাঙচুরের মামলায় প্রাথমিক ভাবে কি নাম ছিল দুই নির্যাতিতার? না কি পরে দু’জনের নাম জুড়ে দেওয়া হয়? মহিলাদের নির্যাতনের সময় কাছাকাছি থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই সব বিষয় নিয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য মহিলা কমিশন। তার প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব এদিন জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের মহিলা কমিশনকে রিপোর্ট দেওয়া হবে। মহিলাদের মারধরের অভিযোগে, ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখে আরও কয়েক জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টাও চলছে।’ গত মঙ্গলবার রাতে ইমেল মারফত পুলিশের কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। পুলিশ এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করেছে, রিপোর্টে সবই উল্লেখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরেই এদিন ‘ক্লোজড’ করা হল ৪ পুলিশ আধিকারিককে।