নিজস্ব প্রতিনিধি: ভূতের মুখে রামনাম বললেও বোধহয় ভুল বলা হবে। তবে সবাইকে চমকে দিয়েছি ষষ্ঠ বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে(Bengal Global Business Summit) বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়(Jagdeep Dhankar)। যিনি দিনের বেশির ভাগ সময়টাই মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য সরকার, রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে টুইট করতে ব্যস্ত থাকেন তিনিই এদিন মুক্তকন্ঠে বাংলা(Bengal) ও মমতার প্রশংসা করে সবাইকে চমকে দিলেন। তবে রাজ্যপাল যে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন এমনটা নয়, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও(Narendra Modi) প্রশংসা করেছেন। একইসঙ্গে কার্যত স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন বাংলা দেশের অর্থনীতি বদলে দিচ্ছে, দেশকে বিকল্প অর্থনীতির রাস্তা দেখাচ্ছে।
এদিন রাজ্যপাল তাঁর অভিভাষণে বলেন, ‘বাংলা ঐতিহ্য-সংস্কৃতির আদর্শ ভূমি। বাংলা আজ যা ভাবে, গোটা দেশ তা একদিন পরে ভাবে। গোপালকৃষ্ণ গোখলে যা বলেছিলেন, প্রতিদিন সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলাতেও একাধিকবার গোপাল কৃষ্ণ গোখলের এই মন্তব্য শোনা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পূবে তাকাও নীতির বাস্তব রূপ দিয়ে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা বাংলাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আগামিদিন বাংলা আরও উন্নতি করবে। পূর্ব ভারতের বিনিয়োগ হাব হবে বাংলা। গোটা দেশের অর্থনৈতিক মানচিত্র পাল্টে দিচ্ছে বাংলা। কোভিডের আতঙ্ক কাটিয়ে দুই বছর পর ফের এই বাণিজ্য সম্মেলন বাংলার সেই সাফল্যের ছবিটাই তুলে ধরছে। আশা করি আগামিদিন উন্নয়নেরও আরও অনেক পথ দেখাবে বাংলা। মোদী চান সকলের জন্য সুরক্ষা, সকলের উন্নতি। আর প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পূর্ণ করার ক্ষমতা রয়েছে বাংলার। দেশের অর্থনৈতিক মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বাংলা। এই রাজ্য বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য নেতৃত্বে বাংলা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এই উন্নয়নে পথ দেখাবে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন।’
রাজ্যপালের এই মোদি-মমতা প্রশংসা নজর টেনেছে দেশের রাজনীতিবিদ থেকে শিল্পপতিদেরও। অনেকেরই ধারনা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সস্তার রাজনীতি টেনে আনলে যে আদতে তাঁর নিজের ভাবমূর্তিই যে বেশি সমালোচিত হবে তা বুঝেই এদিন সেফ সাইডে খেলেছেন ধনখড়। সেই কারণেই চিরাচরিত বিরোধীতা ও সমালোচনার পথ থেকে সরে এসে এদিন বিশ্বের সামনে নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখার দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছেন বাংলার রাজ্যপাল। তাই দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করার পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীরও প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছেন। না করলে সেটা বড্ড বেশি দৃষ্টিকটু হয়ে যেত। সেই পথে না হেঁটে ধনখড় কার্যত ভারসাম্য বজায় রাখার দিকেই নজর দিয়েছেন।