নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য বিধানসভার(State Legislative Assembly) বাজেট অধিবেশনের(Budget Session) প্রথম দিন রাজ্যপালের বাজেট ভাষণকে ঘিরে বিজেপি(BJP) বিধায়কদের বিক্ষোভের ঘটনায় নয় মোড়। বুধবার রাজ্য বিধানসভায় সেই বিক্ষোভকে ঘিরে নিন্দা জানিয়ে বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং মিহির ঘোষ স্বামীর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনল তৃণমূল। সেই প্রস্তাব আবার পাঠ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও রাজ্যের শিল্প ও পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাব পাঠের পরেই বিজেপির ওই দুই বিধায়ককে চলতি অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়(Biman Banerjee)। রাজ্যপালের ভাষণের সময় বিজেপির বিধায়কেরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন সেই বিক্ষোভে যোগ দিয়ে খারাপ আচরণ করেন ওই দুই বিধায়ক। পাশাপাশি তাঁরা বিক্ষোভের নেতৃত্বও দেন। যদিও বিজেপি বিধায়কদের তরফে অধ্যক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে এই সাসপেনশান প্রত্যাহার করার জন্য।
এদিন অধ্যক্ষ জানিয়ে দেন, মিহির গোস্বামী ও সুদীপ মুখোপাধ্যায় রাজ্যপালের ভাষণের দিন অসংসদীয় কাজকর্মে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই কারণে তাঁদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে। চলতি অধিবেশনে তাঁরা আর যোগ দিতে পারবেন না। রাজ্যপালের ভাষণে বারবার ব্যাঘাত ঘটানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এই ঘটনার পাশাপাশি বিধানসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে রাজ্যপালের আরও একবার বিবাদ তুঙ্গে উঠেছে। বিধানসভায় গোলমালের জন্য শাসক পক্ষের দিকে আঙুল তুলে অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিন দিনের মধ্যে এই ব্যাপারে সুবিধাজনক সময় অনুযায়ী অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। সেই ঘটনার জেরে অধ্যক্ষও রাজ্যপালকে পাল্টা জানিয়ে দেন, অধিবেশনের ব্যস্ততার জন্য তিন দিনের মধ্যে রাজভবনে দেখা করতে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও বিধানসভায় স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। বিরোধী দলনেতা সোমবারই অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যের মহিলা মন্ত্রী ও বিধায়কেরা রাজ্যপালকে ‘হেনস্থা’ করেছেন। সূত্রের খবর, বিরোধী দলনেতা মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন— এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনছেন রাজ্যের মহিলা মন্ত্রীরা ও শাসক দলের কয়েক জন মহিলা বিধায়ক। একই সঙ্গে এটাও জানা গিয়েছে রাজ্যপাল বিধানসভার অধ্যক্ষকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন তাতে রাজ্যের বেশ কিছু মহিলা মন্ত্রী ও শাসকদলের মহিলা বিধায়কদের নাম রয়েছে। আর সেই নাম দেখেই রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়েছেন অধ্যক্ষ। তাঁর দাবি, চিঠিতে নির্দিষ্ট করে কয়েক জন মহিলা বিধায়ক-মন্ত্রীর নাম আছে। যাঁরা নিয়মিত বিধানসভায় আসেন, তাঁরাও ভিড়-হট্টগোলের মধ্যে সকলকে হয়তো চিনে নিতে পারবেন না। উনি কী ভাবে নাম জেনে গেলেন? চ্যালেঞ্জ করতে পারি, সকলের মধ্যে বসিয়ে দিলে নাম ধরে উনি চিনতে পারবেন না! বোঝাই যাচ্ছে, কোথা থেকে নাম নিয়ে কোন উদ্দেশ্যে এগুলো লেখা হয়েছে!’
সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার রাতেই অধ্যক্ষকে রাজ্যপালকে যে জবাবি চিঠি পাঠিয়েছেন তাতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, রাজ্যপালের চিঠির বক্তব্য শুধু সত্যের অপলাপই নয়, পক্ষপাতদুষ্ট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি বিধায়কদের একাংশকে বদনাম করার জন্য এই ধরনের মত ব্যক্ত করেছেন। বুধবার রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের ওপরে বিতর্ক হওয়ার কথা ছিল। তাতে মুখ্যমন্ত্রীরও অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু এদিন দুপুরে বি এ কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। তাই এদিন ওই বিতর্কের জন্য কম সময় ধার্য করা হচ্ছে।