নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: ‘ভোট লুঠের মহারানি’ শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান না বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষ। রবিবার প্রহসনের ভোট থেকে দূরে সরে থেকে নীরবে সেই বার্তাই দিলেন তাঁরা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, দেশের সাধারণ মানুষের যে শাসকদল আওয়ামী লীগ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপরে কোনও আস্থা নেই, এদিনের ভোটে তা প্রমাণ হয়েছে।
এদিন সকাল আটটায় শুরু হয়েছিল ভোটগ্রহণ। শেষ হয় বিকেল চারটের সময়ে। কিন্তু সকাল থেকে রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বুথে ভোটারদের উপস্থিতি চোখেই পড়েনি। আসল ভোটারদের অনুপস্থিতিতে দেদার ছাপ্পা ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা। প্রহসনের নির্বাচনের স্বীকৃতি পেতে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে কোটি-কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নিয়ে এসেছিল সরকার। ওই পর্যবেক্ষকদের সাত তারা হোটেলে রাখার পাশাপাশি তাদের এলাহি খানাপিনার বন্দোবস্থ করা হয়েছিল। ওই পর্যবেক্ষকরাও বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনের পরে নিজেদের হতাশা লুকোতে পারেননি।
২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৮৭ শতাংশ। ওই ভোটে জিতে ক্ষমতা দখল করেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার পর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ২০১৪, ২০১৮ সালের ভোটকে প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে বিনা ভোটেই জয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। বাকি আসনে ৪০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পড়েছিল। ২০১৮ সালে ভোট পড়েছিল ৮০ শতাংশ। ওই নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিল দেশের সব বড় দল।
এবারের ভোট অবশ্য দেশের স্বীকৃত দলগুলি বর্জন করেছিল। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব চেষ্টা চালিয়েছিলেন ৫০ শতাংশ ভোটারকে বুথে হাজির করতে। কিন্তু শেখ হাসিনার প্রতি দেশের মানুষ এতটাই তিতিবিরক্ত যে প্রহসনের ভোটে অংশ না নিয়ে ঘরেই বসে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাসবাহিনী হিসাবে পরিচিতি পাওয়া নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে ভোট গ্রহণ। হিংসার বলি হয়েছেন একজন। ৩৫টি জায়গায় অশান্তির বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। ভোট চলাকালীন ১৪ প্রার্থী সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেছেন। থানায় ঢুকে পুলিশকে ধমকানোয় শাসকদলের এক প্রার্থীর প্রার্থীপদ বাতিল করা হয়েছে।