নিজস্ব প্রতিনিধি, পিরোজপুর: সমাজে চিকিৎসকদের ঈশ্বরজ্ঞানে সম্মান করেন অনেকে। কিন্তু সেই মনুষ্যরূপী ঈশ্বরদের এমন এক কাণ্ডের কথা প্রকাশ হয়ে পড়েছে, যা শুনে অনেকেই লজ্জায় মাথা নত করছেন। কেউ-কেউ আবার চরম শাস্তির দাবি তুলেছেন। কিন্তু কী করেছেন মনুষ্যরূপী ঈশ্বর অর্থাৎ চিকিৎসকদের একাংশ? পিরোজপুরের নাজিরপুরে অসহায় এক চা বিক্রেতার ছাগল চুরি করে ভুরিভোজ সেরেছেন। শুধু চিকিৎসকরাই নন, ওই ভূরিভোজে অংশ নিয়েছিলেন হাসপাতালের কর্মচারি থেকে শুরু করে আধিকারিকরাও। মঙ্গলবারই স্থানীয় থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ছাগলের মালিক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পিরোজপুরের নাজিপুরে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের পাশেই চায়ের দোকান চালান আবদুল লায়েক ফারাজী নামে স্থানীয এক বাসিন্দা। চায়ের দোকান চালিয়ে দিন গুজরান হয় না। তাই বেশ কয়েকটি ছাগলও পুষছিলেন। শুক্রবার থেকেই একটি ছাগল খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। প্রিয় পোষ্যকে হারিয়ে চরম আতান্তরে পড়েন। খোঁজ শুরু করেন। সোমবার স্থানীয় এক চামড়া ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ ঋষির কাছ থেকে লায়েকের হারানো ছাগলের চামড়া উদ্ধার হয়।
জেরার মুখে ওই চামড়া ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সাফাই কর্মী বাশার শেখ তাঁর কাছে চামড়া বিক্রি করেছেন। তার পরে ওই সাফাই কর্মীকে গিয়ে জেরা করে জানা যায়, গত শুক্রবার লায়েক ফারাজির হারানো ছাগলটি মেরে ভুরিভোজ সেরেছেন চিকিৎসক, আধিকারিক ও কর্মচারিরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রান্নাঘরেই মাংস রান্না হয়েছে। অন্যের ছাগল মেরে ভুরিভোজ সারার কথা জানাজানি হতেই অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও ভুরিভোজে অংশ নেওয়া অনেক চিকিৎসকই ‘বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল না’ বলে দায় এড়িয়ে গিয়েছেন। মূড অভিযুক্ত চিকিৎসক ফজলে বারি অবশ্য এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি।
মঙ্গলবার থানা সহ প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ার পরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত ৬ মাসে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় ১০টি খাসি চুরি হয়ে গিয়েছে।