এই মুহূর্তে




মায়ের আসনেই জীবনের প্রথম ভোটে লড়বেন খালেদা-পুত্র তারেক

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: দীর্ঘ দু’দশকের বেশি সময় ধরে দলের হয়ে নির্বাচন পরিচালনায় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। বহু নেতাকে নিজের হাতে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছেন। যদিও নিজে কখনও ভোটে লড়েননি। তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। আর জীবনের প্রথম ভোট লড়তে মা খালেদার আসনেই প্রার্থী হচ্ছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লড়বেন বগুড়া-৬ আসন থেকে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের জন্য আগামী ডিসেম্বর মাসেই ভোট নির্ঘণ্ট ঘোষণার কথা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। দীর্ঘদিন বাদে ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালট পেপারেই ভোট নেওয়া হবে। যদিও পাকিস্তানপ্রেমী হিসাবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির তরফ থেকে হুঙ্কার ছাড়া হয়েছে, ‘আগে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট করতে হবে। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।’ যদিও তদারকি সরকারের তরফে পাল্টা হুঙ্কার ছাড়া হয়েছে, ‘ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই। কোনও শক্তি তা বানচাল করতে পারবে না।’

গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ যখন চড়ছে ঠিক তখনই আচমকা ২৩৭ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়ে সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি বৈঠকে বসেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে বৈঠক। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই বৈঠকের সাংবাদিক সম্মেলনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৩৭ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন বিএনির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকায় মাত্র চার সংখ্যালঘুর নাম রয়েছে। তার মধ্যে দুজন হিন্দু, একজন বৌদ্ধ ও একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।

ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, তিন আসন থেকে লড়বেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ওই তিন আসন হল- বগুড়া-৭, দিনাজপুর-৩ ও ফেনী-১। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লড়বেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনে। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লু‍ৎফুজ্জামান বাবর লড়বেন নেত্রকোনা-৪ থেকে।  গোপালগঞ্জ-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন এস এম জিলানী। টুঙ্গীপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-৩ আসনের প্রাক্তন  সংসদ সদস্য ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিএনপির প্রার্থী তালিকায় যে দুজন হিন্দু নেতার নাম রয়েছে তারা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও দলের বর্ষীয়ান নেতা নিতাই রায় চৌধুরী। সম্পর্কে আবার দু’জনে বেয়াই। এর মধ্যে মাগুরা-২ আসন থেকে লড়ছেন নিতাই রায়চৌধুরী আর ঢাকা-৩ আসন থেকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দুজনেই আগে বিএনপির সাংসদ ও মন্ত্রী ছিলেন। এই দুজন ছাড়া আরও দুই সংখ্যালঘু প্রার্থী হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাঙ্গামাটি থেকে দীপেন দেওয়ান ও বান্দরবান থেকে সাংচি প্রু। এর মধ্যে শেষের জন্য বোমাং রাজা। যার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হয়ে কাজ করেছিলেন।

অন্যদিকে, শেখ হাসিনা জমানার অবসানের পরে যখন ইতিহাস থেকে মুক্তিযুদ্ধকে মুছে দিতে কোমর কষে আসরে ঝাঁপিয়েছে মোল্লা ইউনূস ও রাজাকার পন্থী জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা, তখন বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন রুমিন ফারহানা। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সরব হয়েছিলেন। আর তার মূল্য চোকাতে হয়েছে। বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় তাঁর নাম নেই। রুমিন ফারহানার এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি আসনের মধ্যে দলের পক্ষ থেকে ৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়া ‘বিএনপির ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ১৯৯১ সাল থেকে বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাহজাহানপুর) এবং ১৯৯৬ (জুন) সাল থেকে বগুড়া-৬ (সদর) আসনে নির্বাচন করছেন। এ দুটি আসনে তিনি কখনও হারেননি। ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া এই আসন থেকে নির্বাচিত হলেও পরে তিনি ইস্তফা দেন। তখন উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিএনপির জহুরুল ইসলাম। ২০০১ ও ২০০৮ সালেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এই আসনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ২০০৮ সালের উপ-নির্বাচনে এই আসন থেকে জয় পান ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।

 

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

‘শেখ হাসিনাকে মুখ বন্ধ রাখতে বলুন’, ঢাকায় ভারতীয় দূতকে ডেকে ধমক ইউনূস সরকারের  

বাংলাদেশের মাটিতে ৬০ জঙ্গি শিবির চালাচ্ছেন মাসুদ আজহার, অর্থ জোগাচ্ছেন ইউনূসের ছোট কন্যা

হিরো আলমের বিরুদ্ধে ফের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

ঢাকায় পর পর বাসে আগুন, নাশকতার আশঙ্কায়  সব বিমানবন্দরে ‘হাই অ্যালার্ট’

আওয়ামী লীগ নিধন যজ্ঞ চালাতে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেনার বিশেষ ক্ষমতা বাড়াল ইউনূস সরকার

ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরেই ঢাকায় জারি হাই অ্যালার্ট

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ