নিজস্ব প্রতিনিধি: অমানবিকতা নাকি নৃশংসতা যাই বলা হোক না কেনও কম বলা হবে। শিশু সুরক্ষা আইন পকসো অনুযায়ী যৌন অপরাধের জন্য় কেরালা থেকে গ্রেফতার এক মহিলা। ৪০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০,০০০ টাকা জরিমানা হয়েছে ওই মহিলার।
কেরালার বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক আদালত সোমবার এক মহিলাকে ৪০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০,০০০ টাকা জরিমানা করেছে। অভিযুক্ত মহিলা ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের মানসিকভাবে অসুস্থ স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিক শিশুপালনের সাথে থাকতে শুরু করে। সেই সময় শিশুপালন ওই মহিলার এক শিশুটিকে বেশ কয়েকবার নৃশংসভাবে নির্যাতন করে। শিশুটির গোপনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এই সব কিছুই হয়েছে মা তথা ওই অভিযুক্ত মহিলার উপস্থিতিতে।
এরপর নির্যাতিতার এগারো বছর বয়সী দিদি বাড়িতে এলে শিশুটি তাকে নির্যাতনের কথা জানায়। বড় মেয়েটিও শিশুপালনের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিল। অভিযুক্ত শিশুদের হুমকি দেওয়ার করণে কাউকে কিছু বলতে পারেনি। কিন্তু এরপর বড় বোন শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঠাকুমার বাড়িতে চলে যায়। ঠাকুমা সব জানতে পেরে ওই দুই শিশুকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য নিয়ে যায়। সেখানে তারা পুরো ঘটনাটি প্রকাশ করেছিল।
বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আরএস বিজয় মোহন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, “এই অপরাধের জন্য মাকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযুক্তের প্রেমিকারা ওই মহিলার উপস্থিতিতে দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে যৌন নির্যাতন করেছে। অভিযুক্তের আসল স্বামী একজন মানসিক রোগী। এ কারণে তিনি বাচ্চাদের নিয়ে বাড়ি ছেড়ে দুই প্রেমিকের সঙ্গে থাকতেন।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “প্রথম প্রেমিক শিশুপালন সাত বছর বয়সে প্রথম শ্রেণিতে পড়াকালীন মেয়েটিকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করেছিল। সেই সময় নির্যাতিত শিশুটি অভিযুক্ত মহিলাকে পুরো ঘটনাটি জানায় কিন্তু সে কিছুই করেনি। উল্টে সে অন্য আরেক প্রেমিককে নির্যাতন করতে সহায়তা করেছিল।”
বিচারক আর রেখা রায় দিয়েছেন যে অভিযুক্ত মাতৃত্বের জন্য সম্পূর্ণ লজ্জাজনক এবং তার কোনও ক্ষমা চাওয়া উচিত নয় এবং তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া উচিত। ওই নারীর আরেক প্রেমিকও শিশুটিকে যৌন নিপীড়ন করেছে এবং এ বিষয়ে পৃথক মামলা চলছে।
বিচার চলাকালে প্রথম অভিযুক্ত শিশুপালন আত্মহত্যা করেন। তাই শুধু মায়ের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিশুরা বর্তমানে একটি শিশু হোমে বসবাস করছে। এই মামলায় ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এবং ৩৩টি দলিল জমা দেওয়া হয়।