নিজস্ব প্রতিনিধিঃ এই মুহূর্তে কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কের জেরে কার্যত উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। দক্ষিণের এই রাজ্যে স্কুল, কলেজ কিংবা যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। আর সেই বিতর্কের মাঝেই এবার কর্ণাটকের বেশ কিছু মন্দিরের বাইরে পোস্টার পড়ল যে মন্দিরের মেলায় অংশ নিতে কিংবা দোকান দিতে পারবেন না কোনও মুসলিম। ইতিমধ্যেই এই পোস্টারকে কেন্দ্র করের নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক। কেন বারবার এইভাবে সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
জানা যাচ্ছে, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে পুত্তুর তালুকের মহালিঙ্গেশ্বর মন্দির প্রাঙ্গণে শুরু হচ্ছে বার্ষিক মেলা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতি। আর সেই মেলা প্রাঙ্গণের বাইরেই পড়েছে এই পোস্টার। ওই পোষ্টারে লেখা রয়েছে, এবারের মহালিঙ্গেশ্বর মন্দিরের বার্ষিক মেলায় কোনও মুসলিম ব্যবসায়ী দোকান দিতে পারবেন না। একই ছবি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ কন্নড় জেলার বাপ্পান্ডুই শ্রী দুর্গাপমেশ্বরী মন্দিরেও। ওই মন্দিরের বার্ষিক উৎসবেও মুসলিমদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই মন্দিরের বাইরে পোষ্টারে লেখা হয়েছে, এমন কোনও ব্যক্তিকে এই মন্দিরের উৎসবে ঢুকতে দেওয়া হবে না যারা দেশের আইন মানে না, যারা প্রকাশ্যে গোহত্যা করে যে গোমাতাকে আমরা দেবীরুপে পুজো করি। এমন কোনও ব্যক্তি এই উৎসবে অংশ নিতেব পারবেন না যারা ঐক্যতায় বিশ্বাস করেন না। হিন্দুরা এখন আগের থেকে অনেক বেশী সচেতন হয়েছে।
ম্যাঙ্গালুরু শহরের পুলিশ কমিশনার শশী কুমার এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কে বা কারা এই ব্যানার লাগিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘নাগরিক সংগঠন অভিযোগ দায়ের করলে আইনি দলের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। তহসিলদার সেখানে গিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবেন, যার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ অন্যদিকে বুধবার সকালে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ফের নতুন করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই পদক্ষেপকে নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা বিস্ময়কর যে জেলা কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে এখনও নীরব এবং এর বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হল না।’