নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। অথচ সেই দলই কিনা সীমাবদ্ধ সাংবাদিক বৈঠক থেকে ফেসবুক টুইটারের মধ্যেই। সেখানেই যত প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, হুমকি, হুঁশিয়ারি। অথচ ভোটের দিনে তাঁদের দেখা মেলাই ভার। রাস্তাতেও কোনও আন্দোলন করতে দেখা যায় না। যেটুকুও বা দেখা যায় সবটাই সাজানো নাটক হয়ে উঠে আসে। পার্টি এখন আর রিয়ালেস্টিক নয়, ভার্চুয়াল হয়ে গিয়েছে – নাহ এ নির্দিষ্ট কোনও একজনের অভিমত বা মন্তব্য নয়। এটা বঙ্গ বিজেপির নীচু তলার কর্মীদের মনোভাব। দল বাংলায় যেভাবে চলছে তা দেখে ক্ষোভের সুরে এমনটাই জানিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের ক্ষোভ দলের নেতারা রাস্তায় নেমে আমজনতার জন্য আন্দোলন না করে কেন কথায় কথায় আদালতে মামলা করতে ছুটছেন আর কেনই বা সোশ্যাল মিডিয়াতে বুলি সর্বস্ব প্রতিবাদ, হুককি ধমকির নাটক করছেন
বস্তুত একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও বঙ্গ বিজেপিকে ইস্যুলেস গুটিকয় আন্দোলন ভিত্তিক অভিযান করতে দেখা গিয়েছে। তাও এক আধি দিনের জন্য। সেই অভিযান যতনা আন্দোলন ছিল তার থেকে অনেক বেশি সাজানো গোছানো লিখিত চিত্রনাট্য ছিল। বাংলার মানুষ সে সব দেখে উদ্ভ্রান্ত, বিভ্রান্ত হননি মোটেই। তাঁরা দেখেছেন রাজ্যের শাসক দল উন্নয়নের নিরিখে ঠিক কী কী করছে। তার জেরেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ‘আব কে বার ২০০ পার’ শ্লোগান তুলে শেষে ৭৭টি আসন পেয়েই খুশি থাকতে হয়েছে তাঁদের। আর সেই নির্বাচনের পরে সময় যতই গড়াচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের যাবতীয় বুলি শুধুই সাংবাদিক বৈঠকে আর সোশ্যাল মিডিয়াতে সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। বাস্তবের জগতে না তাঁদের কোনও অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে না রাস্তাঘাটে। আর দলের এই অনুপস্থিতিই দলের নীচু তলার কর্মীদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।
শনিবার ছিল রাজ্যের ৪টি পুরনিগমের নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টে একের পর এক মামলা ঠুকেছে বিজেপি। যদিও কোথাও তাঁরা বিন্দুমাত্র সুবিধা করতে পারেনি। তারপরেও বিজেপির নীচুতলার কর্মীদের আশা ছিল ভোটের দিন অন্তত বঙ্গ বিজেপির নেতাদের রাস্তায় নেমে লড়াই করতে দেখা যাবে। কিন্তু কোথায় কী! শনিবার দিনভর বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কোথাও দেখাই গেল না। নেতারা না নামায় কর্মীরাও হত্যোদম হয়ে পড়েন। তাই তাঁদেরও গতকাল সেভাবে কোথাও দেখা যায়নি। এই অবস্থায় দলের নীচুতলার কর্মীদেরই মনে হচ্ছে বঙ্গ বিজেপি এখন সোশ্যাল মিডিয়া, প্রেস মিট আর হাইকোর্টের এজলাসেই আটকে দিয়েছে। বাস্তবের জগতে আর তাঁদের কোনও অস্তিত্ব নেই। তাঁদের দাবি,‘আমাদের পার্টিটা ক্রমশ ভার্চুয়াল হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, হুমকি, হুঁশিয়ারি- সবই ফেসবুক আর টুইটারে। লড়াইয়ের ময়দান কেউ নেই।’